*জলপরীর প্রেমে*
পার্টঃ১৩
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(বাপ্পী)
।।।।।
।।।।।
।।।।।
রাত কেটে গেলো সুন্দর একটা ঘুমে।।।কিন্তু মনে যে নতুন রং খেলতে শুরু করেছে।আর যাইহোক মানব মন তো, এই মন নিয়ে কোনো ভরসাই নাই।।।।আমাকে যে করেই হোক হৃদি আর জারাকে মুক্ত করে আনতে হবে।।।এখানে অন্য কোনো চিন্তা মাথায় আনা যাবে না।
।
সকালে উঠলাম সেনাপতির ডাকে।।।
.
--হুজুর তারাতারি উঠুন।(আনিল)
.
--কি হয়েছে সেনাপতি।(আমি)
.
--আমাদের তারাতারি বের হতে হবে।।।আজকেই দানবদের দুনিয়ায় ঢোকার শেষ রাত।।।আজকে না ঢুকলে আমাদের আবার অপেক্ষা করতে হবে পরের আমাবস্যার জন্য।(আনিল)
.
--হুমমম চলুন।(আমি)
।।।।
।।।।
দুজনে রুম থেকে বের হলাম।।।
.
--তাহলে আপনারা উঠেই গেছেন।(নিলা)
.
--হ্যা।।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাদের সাহায্য করার জন্য।(আমি)
.
--ধন্যবাদ দিতে হবে না।।।আমাকে আপনাদের গুপ্তধনের ভাগ দিলেই হবে।(নিলা)
.
--হ্যা আপনি আপনার ভাগ পেয়ে যাবেন।(আমি)
.
--তো তারাতারি বেরিয়ে পরা যাক।(নিলা)
.
--হ্যা চলুন।(আনিল)
।।।।
।।।।
আমরা তিনজন বের হবো।।।এমন সময় নিলা আমাদের আটকালো।
.
--রাজার সেনা এখানে চলে আসছে।(নিলা)
.
--মানে তারা কি বুঝে গেছে আমরা তাদের সেনাকক্ষ থেকে নকশা চুরি করেছি।(আমি)
.
--আমার তো তাই মনে হচ্ছে।।।এখান থেকে পালাতে হবে।তাদের হাতে পরলে হয়তো রক্ষা পাবো না।(আনিল)
.
--আমাদের ভয়ের কি আছে।আমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করি।(আমি)
.
--আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন।।।একজন মানব হয়ে নিচের দুনিয়ার আধুনিক অস্ত্র ওয়ালা মানুষের সাথে লড়াই করতে চাচ্ছেন।।।আপনিই বোঝান ওকে।(আনিলকে বললো নিলা)
.
--হ্যা হুজুর।।।এখন লড়াই করাটা ঠিক হবে।।।বরং তারা আমাদের চেহারা দেখলে আমাদের পরিচয় বের করে ফেলবে পরে বেশী সমস্যা হবে।। তার চেয়ে আমরা আমাদের গন্তব্যের দিকে আগাতে থাকি।(আনিল)
.
--হুমমম চলেন।(আমি)
.
--আমাদের প্রথমে অস্ত্রের প্রয়োজন সো সেখানেই যাওয়া যাক।।।চলুন বাড়ির পিছনে একটা রাস্তা আছে সেখান দিয়ে বের হওয়া যাক।(নিলা)
.
--হুমমম চলুন।(আমি)
।।।।
।।।।
।।।।
চলতে থাকলাম নিলার সাথে আমি আর আনিল।।।মেয়েটাকে যত দেখছি তত মায়া বারছে ওর উপর।।।এতো মায়াবী একটা মেয়ে একা থাকে কি করে।
.
--আপনি একা থাকেন কি করে।(আমি)
.
--অভ্যাস হয়ে গেছে একা থাকতে থাকতে।(নিলা)
.
--ভয় করে না?(আমি)
.
--আগে করতো।।।কিন্তু এখন ভয়টাকে দূর করে দিয়েছি আমার মন থেকে।(নিলা)
.
--সংসারের কথা কখনো ভাবেন নি?(আমি)
.
--সংসার।।।আমি তো আমার জীবনটা আগে উপভোগ করতে চাই।।।পরে নাহয় করো উপভোগের কারন হবো।।।(নিলা)
.
--ওওওও।(আমি)
.
--আপনাকেও দেখলে কারো মনে হবে না আপনি গুপ্তধনের জন্য এসেছেন।।।কারন যারা এসব খুজে তারা অনেক সাহসী আর খারাপ স্বভাবের হয়।।।কিন্তু আপনি সম্পূর্ণ বিপরীত।(নিলা)
.
--হয়তো।(আমি)
.
--তো এর আগেও কি কোনো গুপ্তধন খুজেছেন?(নিলা)
.
--না আগে কখনো না।।।এটাই আমার প্রথম।।।বাট অনেক adventure এর মুখোমুখি হয়েছি যেগুলো আমি কাল্পনিক মনে করতাম।।।।(আমি)
.
--কিছু কিছু জিনিস কাল্পনিক মনে করাই ভালো।।।(নিলা)
.
--হুমমম হয়তো।।।কারন এখন যদি আমাদের মতো মানুষ জানে যে এমন কাল্পনিক সব কিছু আসলেই সত্য তাহলে তো ভয়ে ঘর থেকে বের হবে না।(আমি)
.
--জানলেও আসতে আসতে ঠিক হয়ে যাবে ব্যাপারটা।(নিলা)
.
--হয়তো।।।।কিন্তু আমরা তো মনে হচ্ছে অস্ত্রের দোকানে আসছি।(আমি)
.
--হ্যা এখান থেকেই তো আমাদের প্রয়োজনীয় অস্ত্র নিবো।(নিলা)
.
--দুঃখিত তবে আমরা কি মানুষের তৈরী বন্দুক দিয়ে দানবদের সাথে যুদ্ধ করবো।(আনিল)
.
--গুলি করলে কি ওর মরবে।(আমি)
.
--আগে ভিতরে চলুন তো।(নিলা)
।।।।।
।।।।।
ভিতরে ঢুকলাম।।।একটা বয়স্ক লোক বসে ছিলো দোকানে।।।সব ধরনের বন্ধুক দেখতে পাচ্ছি।।।wow সামনে থেকে সত্যি সত্যি dream gun গুলো দেখতে পারবো ভাবিও নাই।।।একটা হাতে নিলাম।।।
.
--আমাদের এসব লাগবে না।।।।(নিলা)
.
--তাহলে বের হতে পেরেছো।(দোকানদার।)
.
--হ্যা ডেভিড।এই দুজনই আমাকে বের করতে সাহায্য করেছে।(নিলা)
.
--হুমমম আমার সাথে চলো।।তোমাদের নিরাপত্তার জন্য যেসব লাগবে আমি দেখাচ্ছি।(ডেভিড)
.
--হুমমম চলুন।।।।আপনারা আসুন।(নিলা)
।।।।
।।।।
ভিতরের রুম দিয়ে নিচে একটা সিড়ি গেছে।।।ডেভিড সেখান দিয়ে নামতে লাগলো আমরাও নামতে লাগলাম।
.
--আনিল দেখেছেন এখানে তো সব ধরনের নতুন অস্ত্র রয়েছে।(আমি)
.
--হ্যা আমাদের জলপুরীর অস্ত্র ঔগুলো আকাশপুরীর।।।আর ঔসব তো মনে হচ্ছে নতুন কোনো তলোয়ার।(আনিল)
.
--এখান থেকে আমাদের মন মতো অস্ত্র নিয়ে নি।(আমি)
.
--দারান।।।এখান থেকে মন মতো নিলেই হবে না।।আপনারা যেটা চালাতে পারবেন শুধু সেগুলো নিন।।।আনিল আপনি তো জলমানব আপনাদের অস্ত্র কিভাবে চালাতে হয় সেটা তো ভালো করেই জানেন।।।আপনি আপনার মন মতো নিয়ে নিন।(নিলা)
.
--আমিও তো জলঅস্ত্র চালাতে পারি।(আমি)
.
--পারলে হবে না।।।আপনাকে দক্ষ হতে হবে সেটাই।।আপনি আমার সাথে আসুন।(নিলা)
।।।।
।।।।
আনিল যেসব অস্ত্র নিচ্ছিলো সেগুলোই আমার খুব ভালো লেগেছিলো কিন্তু এই নিলা পিলা আমাকে নিতে দিলো না।।।না জানি কোন খেলনা হাতে ধরিয়ে দেই।আমি মানব সন্তান বলে কি আমাকে কম ভাবে এই নিলা।।।আমিও দেখিয়ে দিবো।
.
--এই তলোয়ার টা আপনি নিন।(নিলা)
.
--তলোয়ার?(আমি)
.
--এটা কোনো সাধারন তলোয়ার নই।(নিলা)
.
--হ্যা।এটা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ধাতু দিয়ে বানানো হয়েছে।।।যতো আঘাত পরুক না কেনো এই তলোয়ার আর এই ডালে এই দুটো জিনিস ভাঙবে না।(ডেভিড)
.
--আমি কি শুধু এই তলোয়ার আর এই ডাল নিয়ে ঘুরবো।এটো বড় দুইটা জিনিস।(আমি হাতে নিয়ে)
.
--দেখি আমার কাছে দাও।(ডেভিড ডাল টা নিয়ে কি জেনো করলো আর সেটা একটা ঘড়ি হয়ে গেলো সেটা আমার হাতে পরিয়ে দিলো।।।আর তলোয়ারটার একটা সুইচে চাপ দিলো সেটা একটা কলম হয়ে গেলো)
.
--নিন এখন তো ছোট হয়ে গেছে।।।(নিলা)
.
--ঘড়িটার উপরে আপনার আঙ্গুলের ছাপ দিন।।।(ডেভিড)
.
--তাতে কি হবে?(আমি)
.
--যখনই আপনার ডালের প্রয়োজন হবে তখনই আপনি আপনার আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিবেন ঘড়িটার উপরে।।।এটা এক রকম বায়োমেট্রিক এর মতো।।।আঙ্গুলের ছাপ পরলেই ডাল হয়ে যাবে।(ডেভিড)
.
--wow...(আমি)
.
--কি পছন্দ হয়েছে।(নিলা)
.
--হুমমম।।।কিন্তু যদি সাথে কোনো বন্ধুক থাকতো একটা।(আমি)
.
--হুমমম এটা দেখতে পারো।।।APH Megnetic Gun।।।এক গুলিতেই instant kill।।।(ডেভিড)
.
--wow....(আমি)
.
--ঔটা মনে হয় আপনাদের মন মতো হলেও দাম মতো হবে না।।।এখানের সবচেয়ে দামী অস্ত্র ঔটা।(নিলা)
.
--হ্যা।(ডেভিড)
.
--আনিল।(আমি)
.
--হ্যা বলুন।(আনিল)
.
--দাম পরিশোধ করে দিন।(আমি)
.
--কত হয়েছে এসবের।।।(আনিল)
.
--জ্বী ১০ হাজার স্বর্ন মুদ্রা।(ডেভিড)
.
--আপনার জলপুরীর ব্যাংকে একাউন্ট আছে।(আনিল)
.
--জ্বী এসব ব্যবসা করার জন্য খুলতে হয়েছিলো?(ডেভিড)
.
--ঠিক আছে আপনার একাউন্টে ট্রান্সফার করে দিচ্ছি।(আনিল)
.
--জ্বী ধন্যবাদ।আবার আসবেন।(ডেভিড)
।।।।
।।।।
অস্ত্রের দোকান থেকে বের হলাম।।।
.
--আপনারা কি ডাকাতি করে আসছেন?(নিলা)
.
--কেনো?(আমি)
.
--১০ হাজার স্বর্ণ মুদ্রা আপনাদের কাছে কোনো ব্যাপারই হলো না তাই বল্লাম।(নিলা)
.
--না আসলে আমার দাদা এই গুপ্তধন থেকে কিছু নিয়ে আসছিলেন।আর সেটা দিয়েই আমাদের দিন চলছে।।।কিন্তু সেটাও ফুরিয়ে যাচ্ছে যার জন্য আমরা যাচ্ছি বেশী করে নিয়ে আসতে।(আনিল)
.
--আচ্ছা আপনার বন্ধুত্ব হলো কি করে এই মানবের সাথে।।।আর আপনি ওনাকে হুজুর কেনো বলেন আপনার মালিক নাকি উনি।(নিলা)
.
--আপনি তো খুব প্রশ্ন করেন।আমার জীবন বাচিয়ে ছিলো উনি একদিন।।।তাই ওনাকে আমি হুজুর বলি।।।আর সেটার পর থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব।(আনিল)
.
--একজন জলমানবের জীবন বাচালো একজন মানব।হাস্যকর লাগলো।(নিলা)
.
--আমি মানুষদের শিকারের জালে আটকা পরেছিলাম আর তখন তিনিই আমাকে মুক্ত করেন সেই জাল থেকে।(আনিল)
.
--অনেক ভালো মনের মানুষ তো তিনি।।।কিন্তু তার চোখে খুব ভয়।।।তাকে কেনো নিয়ে আসছেন।।।আপনি জানেন কত বিপদ সামনে আসবে।(নিলা)
.
--সময় হলে সবই দেখতে পারবেন।।।তার ভিতর মহান যোদ্ধার রক্ত হয়েছে।।।ওনার কিছুই হবে না।(আনিল)
.
--হুমমম দেখা যাক কি হয়।।।(নিলা)
.
--আমাদের এখান থেকে কোথায় যেতে হবে।(আমি)
.
--আপনারা তো জাদুঘরটা তে যাবেন।।।।সেটা এখাম থেকে ভালোই দূরে।।।আমাদের সেখানে যেতে হলে গাড়ি ব্যবহার করতে হবে।।।(নিলা)
.
--তাহলে অপেক্ষা কেনো করছেন।(আমি)
.
--আপনি তো নিশ্চয় জানেন গাড়িতে উঠলে ভাড়া দিতে হবে।।।আর সেটা তো জলব্যাংকের মাধ্যমে দিতে পারবেন না।(নিলা)
.
--টাকা লাগবে।।।কিন্তু আমাদের কাছে তো কোনো টাকা নাই?(আমি)
.
--সেটার ব্যবস্থা আমি করে দিবো।।।কিন্তু ভাগ থেকে কিন্তু একটু বেশী আমি পাবো।(নিলা)
.
--খুব হিসাবী তো আপনি।(আমি)
.
--হ্যা একা থাকলে একটু হিসাবি হতেই হয় নাহলে হয় না।(নিলা)
.
--ভালো।।।ঠিক আছে দিবো।।।চলুন।(আমি)
....
।।।।
একটা গাড়ি নিয়ে আমরা পুরাতন জাদুঘরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছি।।।পথে আমাদের উপর underworld এর ৫ জন সেনা হামলা করে।।।তাদের কে কোনো রকমে মেরে আমরা জাদুঘরে পৌছে গেলাম।।।
।
অনেক পুরাতন একটা জাদুঘর।।।দেখলে ভয়ই করে।।সব জায়গায় জলপরী,আকাশপরীর ভাষ্কর্য.
.
--মানুষ জায়গাটাকে কল্পনার রাজ্য বললেও এখানের সব গুলো বিষয় সত্যি।।।এখানে যেসব গল্প আছে এক একটা রাজ্য নিয়ে সব গুলোই সত্য।।।কিন্তু মানুষেরা সব কল্পনা ভাবে।।।কাল্পনিক বানিয়ে দিয়েছে সব কিছুকে।(নিলা)
.
--হ্যা এখানের ব্যাপারে অনেক বার শুনেছি।।।কিন্তু প্রথমবার আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে।।(আনিল)
.
--তাহলে দেরী করা উচিত হবে না।।।আজকেই পূর্নিমা শেষ হবে।।।আমাদের চাদ ডাকার অপেক্ষা করতে হবে।(আনিল)
.
--এখানে কি গার্ডরা থাকে না।(আমি)
.
--ডাকে বাট রাতে থাকে না।।।কারন রাতে অদ্ভুদ অদ্ভুদ জিনিস হয় এখানে।(নিলা)
.
--সব মূর্তি জীবন্ত হয়ে যায় তাই তো।(আমি)
.
--না।।।(নিলা)
.
--তাহলে?(আমি)
.
--এই আজকেই দেখতে পারবা।।।।।মনে হচ্ছে চাদ ঢেকে গেছে।।।এখনই দরজাটা খুলবে?(নিলা)
।।।।।।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((((চলবে)))))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
।।।।।।