*জলপরীর প্রেমে*
পার্টঃ২১
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)
।।।।
।।।।
।।।।
আমি রুমে চলে আসলাম।।।কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।।।বিশ্বাস করার মধ্যে ছিলো তো অনেকেই।।এখন যে নিলা আর জারাকে ছাড়া কাউকেই বিশ্বাস করতে পারছি না।।।এতোকিছু হয়ে গেলো বরং আমি কিছুই জানলাম না।।।এসব শুধু শুধু কেনো হলো আমার সাথে।।।আমি কি রাজা হতে চেয়েছিলাম ওরাই জোর করে বানালো এখন ওরাই জোর করে আমাকে মেরে রাজ্য নিজের করে নিলো।।।আমি একটা সোফায় মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।।।কালকে ওদের দুজনকে ব্যাপারটা জানাতে হবে।
।
সকাল হয়ে গেছে।আমাকে জারা ডাক দিচ্ছে।
.
--হৃদয় উঠো।(জারা)
.
--হুমমম উঠেছো?নিলা কোথায়?(আমি)
.
--ও একটু ওয়াশরুমে।(জারা)
.
--ও আসুক কিছু কথা আছে তোমাদের সাথে।(আমি)
।।।।
।।।।
নিলা বের হলো।।।দুইজনকেই ঘঠনা খুলে বল্লাম।।।জারা কেদে দিলো ওর আম্মার কাহিনী শুনে।।।ভাবতেই পারছে না ওর মা এতোটা খারাপ হবে।।।আর নিলাও কাদছে শুনেছে তার সৎ বাবাকে আটক করে রেখেছে।
.
--আমি তো আর কোনো পথ দেখি না।।।তারা তিনটা জায়গায় দখল করে নিয়েছে।।।এখন তাদের উপরে শক্তিশালী কেউ নেই।।।আমার মতে আমাদের ফিরে যাওয়া আর উচিত হবে না।(আমি)
.
--কিন্তু এর বিরুদ্ধে আমাদের তো কিছু করতে হবে।(জারা)
.
--হ্যা হৃদয় জারা ঠিক বলেছে।।।তুমি একজন রাজা।।।আর তোমার স্ত্রী হিসেবে আমি কখনো হার মানবো না।।।আমি সব সময় তোমার পাশেই আছি।(নিলা)
.
--আমিও সব সময় তোমার পাশেই আছি।(জারা)
.
--তোমাদের মাথা কি গেছে নাকি।।।তাদের কাছে কত সৈন্য তোমরা জানো?(আমি)
.
--হ্যা সেটাও তো কথা।।।আমাদের সাহায্য দরকার।(নিলা)
.
--আমাদের কিছুই লাগবে না।।।আমি সবচেয়ে ভালো একটা বুদ্ধি দি।।।যেটা হলো আমরা ট্রিশুলটা খোজ করবো।(জারা)
.
--কিন্তু নকশা সেটা তো সেনাপতির কাছে।।।।সেটা ছাড়া তো আমরা কখনোই ট্রিশুলের আশেপাশেও যেতে পারবো না।(আমি)
.
--হ্যা তবে আমার মনে হয় নকশাটা সেনাপতির কাছেও নেই।(নিলা নকশাটা পকেট থেকে বের করে)
.
--তোমার কাছে কিভাবে এলো নকশাটা?(আমি)
.
--তোমাদের যখন আটক করে রাখা হলো।।।আমি তো তোমাদের রুমে গিয়েছিলাম।।।তখন নিয়ে নিয়েছিলাম।।।(নিলা)
.
--wow তাহলে তো আমাদের কাজ হয়েই গেছে।(জারা)
.
--হুমমম তোমাকে অনেক ধন্যবাদ নিলা।(আমি)
.
--বউকে ধন্যবাদ দিতে হয় না।(নিলা)
.
--হুমমম।।।।(আমি)
.
--তাহলে আমাদের রওনা দিতে হবে তো ভারতের উদ্দেশ্যে।(নিলা)
.
--হ্যা।।।কিন্তু কিভাবে যাবো।।।আমাদের তো দেখে ফেলতে পারে যদি পানি পথে আবার ডলফিন দিয়ে যায়।।।আর আকাশপথেও ভয় আছে।প্লেনের জন্য এখন পাসপোর্ট টিকেট সব লাগবে যা আমাদের কাছে নেই।(আমি)
.
--আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে সহজ বুদ্ধি আছে।।।আমরা সমুদ্র পথেই যাবো।।।কিন্তু কেউই বুঝতেই পারবে না।(জারা)
.
--কিন্তু কিভাবে?(আমি)
.
--সেটা আমার উপরে ছেড়ে দাও।।।আগে চলো আমাদের খাবার নিয়ে কোনো সমুদ্রের পাড়ে যায়।(জারা)
.
--ওকে চলো।।।(আমি)
।।।
।।।
খাবার সংগ্রহ করে আমরা তিনজন চলে আসলাম একটা সমুদ্রের বাইরে।।।জারা একটা শীষ দিলো।
.
--তুমি কি ডাকতে চাচ্ছো।(আমি)
.
--তুমি কি এখনো এইটা শিখো নি?(জারা)
.
--না।আমি তো শীষ দিতেই পারি না।(আমি)
.
--দেইখো কি আসে।(জারা)
।।।।
।।।।
একটা বিরাট তিমি মাছ চলে আসলো।।।অনেক বিশাল একটা।।।দেখেই চোখ জুরিয়ে আসলো।।।
.
--আমরা কি ওর উপরে চরবো।(আমি)
.
--আরে গাধা উপরে না আমরা ভিতরে যাবো।(নিলা)
.
--তুমি তো দেখি আমার থেকেও ভালো জানো।(আমি)
.
--কথা না বলে এসব নিয়ে চলো তো।(জারা)
।।।।
।।।।
আমরা তিনজন ভিতরে গেলাম।।।অনেকটা মাছটে মাছটে গন্ধ।।।কিন্তু অদ্ভুদ করা বিষয় ভিতর থেকে একটা জায়গা পুরো খালি।।।
.
--আমার বিশ্বাস হচ্ছে না এমন একটা জায়গা তিমি মাছের পেটে হবে।(আমি)
.
--হুমমম একটা অনেক রেয়ার তিমি মাছ।।।এটা সবচেয়ে কমই পাওয়া যায়।।।এর একটা শক্তি আছে এরা নিজে অদৃশ্য হতে পারে।।।যার জন্য কেউ এদেরকে দেখতে পারে না।।।এরা এভাবেই বেচে আছে।।নাহলে এতোদিন এরা শেষ হয়ে যেতো।(নিলা)
.
--তুমি এতো কিছু কিভাবে জানো।(জারা)
.
--আমি একটা বইয়ে পড়েছিলাম এদের ব্যাপারে।।।কিন্তু আজকে এর ভিতরে থেকে সত্যি অনেক ভালো লাগছে।(নিলা)
.
--আমার তো ভাবতেই অবাক লাগছে যেসব মাছ আমরা খেতাম আজ কিনা এক তাদের একটা বড় জাতির পেতে আমরা।(আমি)
.
--এটা ছাড়া কোনো উপায় নাই।চুপ চাপ থাকো তো।(জারা)
।।।।
।।।।
দুইজনের মধ্যে সেই রকম মিল হয়ে গেছে।।কিন্তু ওদের দেখে বুঝতে পারছি কতটা ভালোবাসে দুইজন আমাকে।।।।এই মাছের পৌছাতে পৌছাতে দুইদিন লেগে গেলো।।।এই দুইদিন আমাদের এই মাছের পেটেই থাকতে হয়েছে।।।কি যে অবস্থা আমাদের তিনজনের সেটা বলে বোঝাতে পারবো না।।।।দুইদিন পর বের হলাম আমরা তিমির মাছের পেট থেকে।।।মাছকে বড় একটা ধন্যবাদ দিলাম আমরা।।।তারপর বিদায় নিলাম তার থেকে।।।
.
--দেখো তখন তো আমাদের বাধা দিয়ে দিলো।।।আমার মতে সেই রাস্তা এখন পুরো নিরাপদ হবে আমাদের জন্য।।।তাই সেখান দিয়েই যাওয়া ভালো হবে।(নিলা)
.
--হুমমম ঠিক বলেছো?(আমি)
.
--তাহলে দেরী না করে চলো যাওয়া যাক।(জারা)
.
--হুমমম চলো।(আমি)
।।।।
।।।।
আবার ও সেই রাস্তা দিয়ে আমরা ঢুকলাম।।।ছোট ট্রেনের মাধ্যমে আমরা চলতে লাগলাম।।।৩ ঘন্টার মতো লাগলো তারপর হঠাৎ ট্রেনটি বারি খেলো।।।সামনে আর রাস্তা নেই।।।ধাক্কায় নিলা আর জারা দুজনেই আমাকে জরিয়ে ধরলো।।।পাশ দিয়ে একটা সিড়ি ছিলো।।।যেটা উপরে গিয়ে উঠেছে।।।সেটা দিয়ে উপরে চলে আসলাম।।।উঠলাম একদম মররভূমির উপরে।।।চারিদিকে শুধু বালি আর বালি।।।।
.
--এখন আমরা কোথায় যাবো।(জারা)
.
--ঔযে দূরে বাজারের মতো দেখা যাচ্ছে ঔখানে গিয়ে আগে এই ম্যাপের জায়গাটা জিজ্ঞাসা করি।(আমি)
.
--হুমমম চলো।।।।(নিলা)
......
।।।।
মরুভূমিতে আছি বলে মনেই হচ্ছে না।।।কারন আমার তো গরম শীত অনুভূতিই হচ্ছে না।।।কিন্তু রোদের তীব্রটা ঠিকই বুঝতে পারছি।।।কারন তাকাতে সমস্যা হচ্ছে।।।হাটতে শুরু করলাম।।।হাটতে হাটতে চলে আসলাম বাজারটাই।।।একজন বয়স্ক লোককে জিজ্ঞাসা করলাম জায়গাটার সম্পর্কে যেখানের কথা Wikipedia তে পড়েছিলাম।
.
--চাচা আপনি কি এই আমাদের রাজহুরা কোথায় সেটা বলতে পারবেন।(আমি)
.
--তোমাদের তো দেখে ভালো পরিবারের মনে হচ্ছে তোমরা সেখানে কেনো যাবে।।।ঔ রাজ হুরায় গিয়ে তো আজ পর্যন্ত কেউ ফিরে আসতে পারে নি।(বয়স্ক লোকটি)
.
--আসলে আমরা এই রহস্যটা বের করতে আসছি।(আমি)
.
--দেখো এতে তোমাদেরই বিপদ।।।আমি ভালো একটা পরামর্শ দি তোমরা ফিরে যাও।(লোকটি)
.
--আমাদের কিছুই হবে না।।।আপনি আমাদের কি বলে দিতে পারবেন।(আমি)
.
--আমি আপনাদের ঔখানে পাঠিয়ে দিতে পারবো কিন্তু আপনাদের জানের কোনো সুরক্ষা দিতে পারবো না।।।ঔ রাজহুরার আগেই এখানের লুটবাজদের আস্তানা।।।তাদের কবলে পরলে আপনাদেরকে মেরে আপনাদের সব সম্পত্তি নিয়ে যাবে।।।আর আপনারা দুইজন মেয়ে মানুষ ও আছেন।।।আপনাদের ধর্ষন করে মেরে ফেলবে কিংবা ওদের দাসী বানিয়ে রাখবে।(লোকটি)
.
--এমন কিছুই হবে না।।।(আমি)
।।।
।।।
লোকটি আমাদের একটা গাড়ি ভাড়া করে দিলো।।।আর ড্রাইভারকে বললো আমাদেরকে আমাদের জায়গায় দিয়ে আসতে।।।।দেখলাম বুইরা সালার নজর ভালো না।।।নিলা আর জারার দিলে খুব খারাপ দৃষ্টিতে তাকাচ্ছিলো।।।সালার বয়স বেশী বলে বেচে গেলো নাহলে যে কি করতাম।।।।
।
গাড়িতে যেতে যেতে রাত হয়ে গেলো।।।আমি নিলার কাধে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে পরেছি।।।জারাও জানালার গ্লাসের উপরে মাথা দিয়ে ঘুমাচ্ছিলো।।।শুধু জেগে ছিলো নিলা।।।নিলা আমার মাথায় হাত বুলাচ্ছিলো।।।হঠাৎ আমার গালে একটা চুমু দিয়ে হালকা হেসে দিলো নিলা।।।আমি তো গভীর ঘুমে ব্যস্ত।।।।
।
চোখ খুল্লাম দেখলাম আমি আর গাড়িতে নেই।।।জারা আমাকে ডাকতেছিলো।।।আমি উঠলাম।।।ভালো করে চোখ মিলতেই দেখলাম জারা আমার পাশে।।কিন্তু নিলাকে দেখতে ছি না।
.
--কি হয়েছে।।।নিলা কোথায় ওকে দেখছি না।।।আর ঔখানে ঔ লোক গুলো বাধা কেনো?(আমি)
.
--অনেক কাহিনী হয়ে গেছে।।।আমিও কিছুই জানতাম না।।।কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেখি।।।।আর নিলা দেখবা তোমার নিলাকে?????(জারা)
.
--হুমম।(আমি)
.
--উপরে তাকাও।(জারা)
।।।
।।।
উপরে তাকালাম।।।জোৎসনা রাত তাই স্পষ্ট দেখতে পেলাম নিলার পিঠে পাখা।।।সে আপন মনে উড়তে ছিলো।।।আর ঔ বাধা লোক গুলোকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক ভয় পেয়েছে ওরা।।কয়েকজন বেহুস হয়ে গেছে।।।আর বাকিরা কান্না করতেছে।।।নিলা আমার উঠা দেখে নিচে নামলো।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((((চলবে)))))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।