*জলপরীর প্রেমে*
পার্টঃ১৭
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)
।।।।।
।।।।।
।।।।।
.
--অনেক সাহায্যই করেছেন আমাদের আর আপনার সাহায্য আমাদের দরকার হবে না।।।আপনি যেতে পারেন এখন।(আনিল)
.
--দেখুন এই লড়াইতে হেরে যাবেন সেটা আমি চাই না।।।কারন????(নিলা)
.
--দেখুন আপনি প্লিজ চলে যান।।।এখন রাগ আমার ও হচ্ছে আপনার উপরে।(আমি)
.
--ঠিক আছে যাচ্ছি।(নিলা চলে গেলো)
.
--আনিল এবার বলুন কাল কি করা যায়।(আমি)
.
--দেখুন আপনার সব প্রশিক্ষনের পর এখনো কোনো রনক্ষেত্রে পাঠানো হয় নি।।।(আনিল)
.
--এবার সময় হয়ে গেছে।(আমি)
.
--হ্যা তবে নিম্নতর থেকে উপরে যেতে হয় কিন্তু আপনি সোজা সোজি একদম উপরে চলে আসছেন।।।এখন আপনার উপরেই ভরসা আমরা এখান থেকে যেতে পারবো কি পারবো না?(আনিল)
.
--ওকে তাহলে কালকেই দেখা যাবে কি হয়।(আমি)
।।।।।
।।।।।
সুন্দর একটা ঘুম দিলাম।।।সকাল সকালই উঠতে হলো।।।।আমাদের ডাক দিয়ে নিয়ে গেলো একজন সৈনিক।।।।।।আনিল এর সাথে বের হলাম।।।।একটা ছোট কক্ষে আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।।।খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমাদের নিয়ে আসা হলো একটা,দেখে মনে হচ্ছিলো স্টুডিয়াম।।।।হ্যা কিন্তু এখানে মারামারি করা হয়।।।।সুন্দরই লাগছে।।।ভিতরে দেখছি মারামারি শুরুও হয়ে গেছে।আমি আমাদের সাথে থাকা সৈনিককে জিজ্ঞাসা করলাম।
.
--এতো আয়োজন কেনো করা হয়েছে?(আমি)
.
--.......(কোনো কথায় বলছে না)
।।।।
।।।।
আমি ও আর জিজ্ঞাসা করলাম না।।।।দেখলাম সেনাপতিকে মারামারি করতে।।তার দুটো পাখা বের করে সে নিষ্ঠুর ভাবে যুদ্ধ করছে যতক্ষন না অপর পক্ষ হার স্বিকার করছে।।।ভয় পাচ্ছি তার আচরন দেখে।।।কোনো মায়া দেখাচ্ছে না।।।আমাকে তো একটা পাখার ঝাপ্টা দিলেই আমি উড়ে যাবো আর আমি কিনা তার বিরুদ্ধে লড়তে পারি।কিন্তু কিছুই তো করার নাই এখানে।আমাদের এখান থেকে বের হতে হলে লড়তে তো হবেই।।।তাই বেশী কিছু না ভেবে প্রস্তুত হতে লাগলাম।।।
।
আমাকে অস্ত্র সিলেক্ট করতে বললো।।।আমি দুটো তলোয়ার নিলাম।।।আজকে হয়তো আমার দিন শেষ হয়ে যাবে।।।আল্লাহ তুমিই রক্ষা কইরো।।।।।।আমি নেমে গেলাম।।।চলে আসলাম সেনাপতির সামনে।।।একটু আগেই সে গুনে গুনে ৬ জনকে ক্ষতবিক্ষত করেছে।।।তারা মানুষ ছিলো না তাই হয়তো বেচে গেছে।।।কিন্তু আমি তো মরে যাবো মনে হয়।।।আনিল তো শুধু বলে মহান রাজার শক্তি আমার শরীরে আজকে কাজ করলেই হলো।
.
--আপনি তো মানব।।।আপনার সাথে আমি খুব সহজ ভাবেই লড়বো।(সেনাপতি)
.
--হুমমম ধন্যবাদ।(আমি ভয়ে)
.
--মনে হচ্ছে ভয় পাচ্ছেন।(সেনাপতি)
.
--হুমমম কিছুটা।।।আসুন শুরু করেন।(আমি)
.
--হুমমম।(সেনাপতি)
।।।।
।।।।
সেনাপতির সাথে লড়াই শুরু হলো।।।যেটা হওয়ার সেটাই হলো।।।সেনাপতি আমাকে মারতে শুরু করলো।।।জায়গায় জায়গায় ক্ষত হয়ে যাচ্ছে।।।একটা সময় আমি তলোয়ার দিয়ে দিলাম একটা কোপ।।।সেটা লাগলো সেনাপতির মুখে।।।মুখ হালকা কেটে গেলো।।।সেনাপতি তার পাখা দিয়ে দিলো ঝাপ্টা।এক ঝাপ্টাই আমি দূরে পরে গেলাম।।।উঠার ও শক্তি পেলাম না।।।মনে হচ্ছে এই বুঝি আমার দম বন্ধ হয়ে যাবে।।।সেনাপতিকে দেখলাম আমার দিকেই আসছিলো।আমার চোখ বন্ধ হয়ে গেলো।।।চোখ খুলতেই আমার সামনে একটা জলমানব কে দেখতে পেলাম।
।
জায়গাটাও বদলে গেছে।আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
.
--কে আপনি?(আমি)
.
--আমি?আমি হলাম তোমার জীবনদাতা।।।যে নিজের জীবন ত্যাগ করে তোমার আর তোমার বোনের জীবন বাচিয়েছিলাম।(জলমানব)
.
--তার মানে আপনিই হিলোরাস।(আমি)
.
--হ্যা রাজা হিলোরাস টিটান।(হিলোরাস)
.
--আমি কি মরে গেছি?(আমি)
.
--কেনো একজন মৃত জলমানব কে দেখছো বলে কি মনে হচ্ছে তুমিও মরে গেছো?(হিলোরাস)
.
--হ্যা।(আমি)
.
--হাহাহাহা।।।আমি সব সময় তোমার ভিতরেই।।।আমার শরীর মৃত হলেও আমার সব শক্তি তোমার ভিতরেই তাই আমাকে দেখতে পাচ্ছো তুমি।।।(হিলোরাস)
.
--আপনার শক্তিগুলো কিভাবে ব্যবহার করবো আমি একটু বলে দেন।(আমি)
.
--সব তো তোমারই এখন।।।নিজেই বের করে নাও কিভাবে কি করবা।।।সময় খুব কম তোমার কাছে।তোমার বোনের কিন্তু খুব কষ্ট হচ্ছে আকাশপুরীতে থাকতে।।।সাথে আমার মেয়েরও।(হিলোরাস)
.
--যাবেন না।(আমি চিল্লিয়ে উঠলাম কিন্তু চলো গেলো উনি)
.।।।।
।।।।।
সাথে সাথে বাস্তবে চলে আসলাম।দেখলাম সেনাপতি এগিয়ে আসছে আমার দিকে।।।আমি ও উঠে গেলাম।।।আগের থেকে নিজেকে অনেকটা শক্তিশালী মনে হচ্ছিলো।।।।এখন মনে পরলো আনিল যখন আমাকে ট্রেনিং দিয়েছিলেন তখন তিনি কি কি করেছিলেন।।।তার মতো করেই লড়তে শুরু করলাম।।।দুজনেই কম কিসের।।।কিন্তু আমি একটু কমই তার কাছে।।।
।
.
--দেখুন হার মেনে নিন।।।নাহলে অবস্থা আরো খারাপ হবে।(সেনাপতি)
.
--আপনি আপনার পুরো শক্তিতে লড়ুন তাও আমি হারতে রাজি নই।(আমি)
।।।।
।।।।
সেনাপতি রাগে তার ডানা খুলে উড়তে উড়তে লড়াই করতে লাগলেন।।।এখন তো তার সাথে কিছুতেই পেরে উঠা যাচ্ছে না।।।আমাকে ধাক্কা দেওয়া আমি মাটিতে পরে গেলাম।।।আমার হাতে কিছুই রইলো না আত্মরক্ষার জন্য।।।সেনাপতি তার তলোয়ার আমার উপরে চালাতে গেলো হঠাৎ মনে পরলো হাতে তো ঢাল ছিলো।।।।ঘড়িটাই আঙ্গুল দেওয়ার সাথে সাথে ঢাল হয়ে গেলো আর তলোয়ারের আঘাতে আমার কিছুই হলো না।।।।
।
কানে কি জেনো একটা শুনতে পেলাম।।।কেউ বলছে আশে পাশের পানিকে ডাকো।।।পানিই তোমার শক্তি।।।আওয়াজটা হিলোরাসের মনে হলো।।।যাইহোক চেষ্টা করে দেখি।।।নিজের চোখ দুটোকে বন্ধ করলাম।।।এইটা আমি জারাকে করতে দেখেছি।।।তাই আমিও চেষ্টা করতে লাগলাম।।।।এটা সেনাপতিও আমাকে দেখিয়েছিলেন।চোখ বুঝে পানির কথা ভাবতে লাগলাম।।।আশে পাশের সব পানির শব্দ আমি শুনতে পাচ্ছিলাম।।।তারা যেনো আমার ডাকের জন্যই অপেক্ষা করে বসে আছে।আমি দুইহাত দিয়ে তাদের ইশারা করলাম।।।একসাথে অনেকটা পানি উঠে আসলো চারপাশ থেকে।সব পানি এসে আমার ইশারার অপেক্ষা করতে লাগলো।।।আমি সব সেনাপতির দিকে তুলে দিলাম।।।পানিতে সেনাপতি পুরো ভিজে গেলো এখন তার ডানাগুলো ভিজে গেছে।।।সে এখন উড়তে পারবে না।।।
।
তাকে আমার মতোই নিচে থেকে যুদ্ধ করতে হবে।।।সে এখন অনেক রেগে গেছে।।।রেগে রেগে সব আঘাত করতে লাগলো।।।তার আঘাত গুলো রক্ষা করা আমার পক্ষে কষ্ট কর হয়ে গেলো।।যেখানে সেখানে আঘাত লেগে কেটে ছিড়ে যাচ্ছে।।।কিন্তু আমি প্রতিঘাত করতে পারছি না।।।
.
--কি হলো আপনার সব পানি কি শেষ হয়ে গেছে।নিন এখন কি করবেন।হার মেনে নি।(সেনাপতি)
.
--দেখা যাক কি হয়।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি আবার ও চোখ বুঝলাম।।।পানির ব্যাপারে আবার ভাবতে লাগলাম।।।আমি আশেপাশে কোনো পানির খোজ পেলাম না।।।।কিন্তু উপর থেকে পানির শব্দ পেলাম।।।।পানি না শুধু।।।অনেক পানি।।।হ্যা আমি উপর থেকে ইশারা দিলাম।।।।বুঝতে পারছি উপরে সাগর।।।আমি সব পানি নিয়ে আসবো।।।শুধু সেনাপতি না।।।সবাইকে তলিয়ে মারবো।।।উপর থেকে পানি সজোরে আসার চেষ্টা করছে।আশে পাশের সবাই মনোযোগ দিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে।।।হঠাৎই সেনাপতির কাছে এসে একজন বলতে শুরু করলো,
.
--জনাব আমাদের উপরের প্রতিরক্ষা ঢাল ফাটতে শুরু করে দিয়েছে।।।উপর থেকে পানি সোজা ভিতরে আসতে চাচ্ছে।(সৈনিক)
।।।।
।।।।
আমি কোনো কথা বলছি না।।।আমি সবাইকে তলিয়ে দিবো।কোনো কথা হবে না এর মাঝে।।।দেখি রাজা ভাবসাব দেখে সোজা আমার কাছে চলে আসছে।।।আমাকে থামতে বলতেছে সে।।।সাথে আনিল ও এসেছে।
.
--আপনি থামুন দয়া করে।।।আর লড়াই এর প্রয়োজন নেই সেনাপতি হার মেনেছে।(রাজা)
.
--কেবল তো শুরু করেছিলাম এতো তারাতারি শেষ করবো।(আমি)
.
--আমি বুঝতে পেরেছি মহান রাজা হিলোরাসের শক্তি আসলেই আপনার ভিতরে।।।আপনি দয়া করে আর উত্তেজিত হবেন না।।।আমার সাথে চলুন রাজ প্রাসাদে।(রাজা)
.
--কেনো লড়াই কি এতো তারাতারি শেষ হয়ে গেলো?(আমি)
.
--হ্যা।।।আপনিই বিজয়ী হয়েছেন।।।এখন চলুন আপনাকে আপনার পুরস্কার দেওয়া হবে।(রাজা)
.
--জ্বী না।।।আমরা এখনি যেখানে ছিলাম সেখানে যেতে চাই।।।আমাদের কাছে সময় খুব কম।(আমি)
.
--সেটা কি করে হয়।।।আপনি রাজা হয়তো রাজাদের নিয়ম আপনি জানেনই।।।নিয়ম ভাঙলে কি সে আর রাজা হয়?(রাজা)
.
--হুজুর এখানে একদিন থাকায় যায়।।।উনাদের আধুনিক যন্ত্র দিয়ে আমাদের গন্তব্যে পৌছে দিতে পারবে ওনারা।(আনিল)
.
--ঠিক আছে আপনি যখন বলছেন থাকা যাবে।(আমি)
.
--তাহলে চলুন আমার সাথে।(রাজা)
।।।।
।।।।
রাজার সাথে আমরা গেলাম রাজ প্রাসাদে।।।এখন আমাদের সাথে ব্যবহার আগের তুলনায় শতগুন ভালো করা হচ্ছে।।।বিষয় টা কি শুধু এই বিজয়।।।আমার তো মনে হচ্ছে না।।।তাও বেশ ভালো লাগছে।দুপুরের খাবার খেয়ে রাজ শয়নকক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম এমন সময় আনিল এসে আমাকে বললো,
.
--হুজুর।(আনিল)
.
--কি হয়েছে আনিল।।।আপনাকে এতো উত্তেজিত মনে হচ্ছে কেনো?(আমি)
.
--ব্যাপার মোটেও ভালো না।।আমরা মোটেও এই বিষয়ে অজ্ঞত।(আনিল)
.
--কি হয়েছে আগে বলবেন তো।(আমি)
.
--কি হয় নি সেটা বলেন।(আনিল)
.
--আরে আগে বলেন।(আমি)
.
--আমি সম্পূর্ণ ভুলেই গিয়েছিলাম।।।(আনিল)
.
--কি ভুলে গিয়েছিলেন।(আমি)
.
--আমাদের সব রাজ্যে এমন প্রতিযোগিতা হয় রাজকুমারীর বিয়ের জন্য।।।যেখানে অন্য সব রাজ্যের রাজকুমার-রাজারা এসে জিতার চেষ্টা করে।।।যে জিততে পারে তার সাথে রাজকুমারীর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।।।(আনিল)
.
--তো।(আমি)
.
--তো আপনি জিতেছেন।(আনিল)
.
--মানে আপনি কি বলতে চাচ্ছেন নিলাকে এখন আমাকে বিয়ে করতে হবে।(আমি)
.
--হুমমম।(আনিল)
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((((চলবে)))))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।