*জলপরীর প্রেমে*
পার্টঃ১১
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)
।।।।
।।।।
।।।।
.
--মানে।(আমি)
.
--শুধু মানে মানে করছো।।বুঝতে কি পারছো না।(শান্তা)
.
--ওরা কোথায়।আর তুমিই বা কে?(আমি)
.
--ওরা আমার মায়াজালে বন্ধি এখন।।।আর আমাকে হয়তো এঔ রূপে চিনবে না।(বলেই শান্তা রূপ পাল্টালো)
.
--তুমি?(আমি)
.
--হ্যা।।সেদিন তোমাকে নিয়ে যেতে দেই নি এই জলপরীরা আর আজকে এই জলপরী তোমাকে আমার থেকে আলাদা করছে।আমি সেটা হতে দিতে পারি না।(শান্তা)
.
--দেখো তোমাকে আমি ভালোবাসি না।।।তুমি আমাকে মায়ায় ফেলেছিলে।।।তোমার উপরে কখনো আমার ফিলিংস ছিলো না।(আমি)
.
--আমি কিছুই শুনতে চাই না।।আমি এই পর্যন্ত যা চেয়েছি সবই পেয়েছি।।আমি তোমাকে চেয়েছি তোমাকে না পেলে কাউকেই পেতে দিবো না।(শান্তা)
.
--প্লিজ ওদেরকে তুমি ফেরত দাও।।(আমি)
.
--হুমমম দিবো।।।কিন্তু তোমাকে চিরদিনের জন্য এই জলপরীটাকে ভুলে যেতে হবে।।।তোমার মনে ওর জন্য যত ভালোবাসা সব মুছে ফেলতে হবে।।।(শান্তা)
.
--আমি সেটা কখনোই পারবো না।(আমি)
.
--তাহলে ওদের কথাও ভুলে যাও।আমি তোমাকে না পেলে ওকেও পেতে দিবো না।।।(শান্তা)
.
--আমার বোনটাকে তো আমাকে ফেরত দাও।সে তো একজন মানুষ তোমাদের ঔখানে সে থাকতে পারবে না।(আমি)
.
--আমি বেশী কিছু জানি না।।।আমি তোমাকে ভালোবাসি।।তুমি যদি আমাকে বিয়ে করতে রাজি না হও আমি ওদেরকে আমাদের দাস বানিয়ে রাখবো।(শান্তা)
.
--শুনো প্লিজ।(আমি)
।।।।
।।।।
আর কিছু বলতে দিলো না আমাকে।।।সে অদৃশ্য হয়ে গেলো।।আমি এখন কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।।।হঠাৎই মনে পরলো জলপুরীর সেনাপতি তো আমাকে একটা ছোট ফোন দিয়েছে।।।সেটা পকেটে আছে।।।সেটা দিয়ে সেনাপতিকে ফোন দিলাম।।।।।
।।।
।।।
আমি একটা বেঞ্চে বসে আছি।।।সেনাপতিও চলে আসছে।।।পানি থেকে উঠে সাধারন মানুষের মতই আমার পাশে এসে বসলো।।।আমি বড় চিন্তাই পরে গেলাম।।সব বল্লাম সেনাপতিকে।
.
--আমি এই ভয়েই ছিলাম।।তাই রানী আম্মাকে আপনাদের এখানে পাঠাতে মানা করেছিলাম।।।কিন্তু তিনি আপনাদের আসতে অনুমতি দিয়ে দিলো।।।আপনিই তো আসতে চাইলেন।দেখেন আপনাকে এর জন্যই মানা করা হয়েছিলো।।।আপনি না আসলে আপনার পরিবারও ঠিক থাকতো।।।আবার আমাদের রাজকুমারীও ঠিক থাকতো।(সেনাপতি)
.
--আমি যাবো আকাশপুরীতে।।।আমি ওদেরকে নিয়ে আসবো।(আমি)
.
--পাগল হয়েছেন নাকি।।।আপনি জলপুরীর রাজা হবেন।।।আপনি একবার আকাশপুরীতে গেলে আপনাকে কখনোই আসতে দেওয়া হবে না।।আসতে চাইলে আপনার জীবন নিয়ে নিবে ওরা।।আপনাকে পুরো বন্ধী অবস্থায় রাখবে ওরা।(সেনাপতি)
.
--তাছাড়া তো ওদের উদ্ধার করার আর কোনো উপায় নেই।(আমি)
.
--আছে।।।আপনি আমার সাথে চলুন।।।আপনাকে প্রস্তুত করতে হবে।(সেনাপতি)
.
--কোথায় যাবো।(আমি)
.
--রানী আম্মার সাথে কথা হয়ে গেছে তিনি আপনাকে তারাতারি জলপুরীতে নিয়ে যেতে বলছেন।(সেনাপতি)
.
--হুমমম চলুন।(আমি)
।।।।
।।।।
সেনাপতির সাথে চলে আসলাম আবার জলের রাজ্যে।।।সোজা রানীর কাছে চলে আসলাম।
.
--ওরা জলপুরীর রাজকন্যা এবং জলপুরীর হবু রানীকে অপহরন করে অনেক বড় অন্যায় করেছে।।।আমাদের ওদের সাথে যুদ্ধ করা উচিত।(রানী)
.
--দুঃখিত রানী আম্মা কিন্তু ওদের সাথে যুদ্ধ করে আমরা আজ পর্যন্ত পেরে উঠতে পারি নি।।।আমার মনে হয় না এখনও পারবো।(সেনাপতি)
.
--আমাদের সেনা তো আগের থেকে শক্তিশালী হয়েছে।।যুদ্ধ ছাড়া আমরা রাজকন্যাকে ফিরিয়ে আনতে পারবো না।(মহা মন্ত্রী)
.
--হ্যা মহা মন্ত্রী ঠিকই বলেছেন।(রানী)
.
--হ্যা এটা মানছি আমাদের সেনা আগের থেকে অনেক শক্তিশালী।।।কিন্তু তাদের সেনা ও আমাদের থেকে অনেক শক্তিশালী।এটা মানবদের সাথে আমাদের যুদ্ধ হবে না।।এটা হবে আকাশপুরীদের সাথে।(সেনাপতি)
.
--হ্যা সেটা ঠিক।কিন্তু আমাদের তো কিছু করতে হবে।(সেনাপতি)
.
--আমি কি বলি রানী আম্মা আমাকে ১৫ দিনের সময় দিন।।।আমি রাজা কে প্রস্তুত করি।(সেনাপতি)
.
--এতো কম সময়ে সেটা কিভাবে সম্ভব।আর সে একজন মানব সন্তান।(মহা মন্ত্রী)
.
--মহা মন্ত্রী।আমাদের রাজা হারকিউমাসও কিন্তু মানব সন্তানই ছিলেন।।।।(সেনাপতি)
.
--তার কাছে মহান ট্রিশুল ছিলো।।।কিন্তু আমাদের এই রাজার কাছে সেটা নেই।(মহা মন্ত্রী)
.
--তার ভবিষ্যৎ বানী তো ঠিকই জানেন তাই না।।।তার মতো একজন মানব সন্তানই যে এই জলপুরীর রাজা হবেন সেই রাজাই তার ট্রিশুলটি পাবেন।(সেনাপতি)
.
--আমাদের রাজা হিলোরাজ মানব সন্তানকে রাজা বানানোর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।।।আমাদের সেটা মনে রাখতে হবে।।যেভাবেই হোক আমাদের রাজা আমরা পেয়ে গেছি।।।সেনাপতি আপনি ওনাকে প্রস্তুত করেন।আর খুব শীঘ্রই অভিষেকের ব্যবস্থা করেন মহা মন্ত্রী।(রানী)
.
--হুমমম।(সেনাপতি)
।।
।।।
।।।
রানী আম্মা কান্না করতে করতে চলে গেলেন।।সেনাপতি আমাকে নিয়ে আসলেন তার সাথে।।আমাকে প্রশিক্ষন দিতে লাগলেন।
.
--আমাদের রানী আম্মা রাজকুমারীকে অনেক ভালোবাসেন।।।কখনো নিজের চোখের আরালে থাকতে দিতেন না।।।কিন্তু কিছুদিন যাবৎ সে আপনার সাথে ছিলো।প্রতিদিনই কান্না করেছেন।(সেনাপতি)
.
--ওওওও(আমি)
.
--আমাদের একটা রাজকুমার ছিলো কিন্তু।(সেনাপতি)
.
--কিন্তু কি?(আমি)
.
--কিন্তু তার ভালোবাসা হয়ে যায় একটা আকাশ পরীর সাথে।।।একজন আকাশ পরী তো আর এই জলের মধ্যে থাকতে পারবে না।আর আমাদের রাজকুমার তাদের ঔখানে থাকতে পারবে না।।তাই তারা চলে গিয়েছিলো মানবদের কাছে।।আপনাদের দেশেই তারা সুন্দর জীবন যাপন কাটাতে ছিলো।।।তাদের একটা মেয়েও হয়েছিলো।।আমাদের রাজা আর রানী মেনে নিয়েছিলো কিন্তু আকাশপুরীর রাজা মানতে পারে নাই ব্যাপারটা।কারন পরীটা ছিলো বড় রাজকন্যা।।।।(সেনাপতি)
.
--তারপর কি হয়েছিলো?(আমি)
.
--রাজা অনেকবার বলেছিলো পরীটাকে রাজকুমারকে ছেড়ে ফিরে যেতে।কিন্তু সে ফিরে যায় নি।।।তাই রাজা লোক পাঠিয়ে রাজকুমার আর তার মেয়েকে হত্যা করে আকাশপুরীর রাজকন্যাকে নিয়ে চলে যায়।(সেনাপতি)
.
--তখন আপনারা কিছু করেন নি।(আমি)
.
--আমাদের অনেক আগের শত্রুতা।।।কিন্তু একটা মিমাংসা হয়েছিলো আমাদের মাঝে যদি আমাদের কেউ ওদের কাউকে নিয়ে চলে আসে জোর করে তাহলেই শুধু যুদ্ধ হবে।।।এখানে যেহেতু দুইজনই পালিয়েছে সেই অনুযায়ী দুইজনকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিলো।যেটা আমাদের রাজা করেছিলেন।।।কিন্তু তাদের রাজার সহ্য হয় নি।(সেনাপতি)
.
--আপনারা যুদ্ধ করতেন।(আমি)
.
--আমরা তাদের সাথে কখনো যুদ্ধ করে পেরে উঠে পারি নি।।।আমরা যদি তাদের সাথে যু্দ্ধ করি তাহলে অনেক নিরীহ মানুষের জীবন যায়।।।তাই আমরা যুদ্ধে যায় না তাদের সাথে আর।(সেনাপতি)
.
--এখন তো যেতে পারবেন যুদ্ধে তাই না।(আমি)
.
--যুদ্ধ তো তাদের সাথে আমরা করবোই।তাদের আকাশপুরীতে গিয়েই আমরা তাদেরকে মারবো।।।।তাদের কে দেখাবো আমরা জলে থাকি বলেই তাদের থেকে কম না।।।(সেনাপতি কান্না করে দিলো)
.
--আপনি কান্না করছেন?(আমি)
.
--ওরা আমার ছোট ছেলেটাকে মেরে ফেলেছিলো।।কি ভুল ছিলো ওর।।।কিছুই ছিলো না।।।শুধু শুধুই ওকে উচু থেকে ফেলে দিয়েছিলো।(সেনাপতি)
.
--আপনি কাদবেন না।।।আপনার প্রতিশোধ আপনি খুব তারা তারিই পাবেন।(আমি)
।।।।।
।।।।।
দেখতে দেখতে ১৫ টা দিন কেটে গেলো।।।।আমি তো চিন্তাই আছি আমার বাবা আর আম্মু আমাদের নিয়ে কতো না চিন্তা করছে।।তাদের কে না বলেই যে আমরা নিখোজ হয়ে গেছি।।অনেক চিন্তা হচ্ছে তাদের জন্য।।যদি শান্তা ওদের কিছু করে ফেলে সেই ভয় ও করছে।।।।কিন্তু কিছুই করার তো আর নাই।।।আজকে আমার অভিষেক হলো।।।অবাক করা বিষয় হলো সব।।।আমাকে কিসব আশ্চর্যকর পানীয় খাওয়ানো হলো।।।সেনাপতি বলেছে এসব খেলে নাকি শক্তি বাড়ে।।।।।অবশেষে রাজার উপাধি পেয়ে গেলাম।।আমাকে সিংহাসনে বসানো হলো।।।আমি বসে আছি আর মন্ত্রী আমাকে উপদেশ বানী শোনাচ্ছে।আমি চুপচাপ বসে আছি।সব কার্যক্রম শেষে,
.
--আমাদের বের হতে হবে হুজুর।(সেনাপতি)
.
--কিন্তু কোথায়?(আমি)
.
--মাটির নিচের দুনিয়ায়?(সেনাপতি)
.
--সেটা আবার কোথায়।(আমি)
.
--সেটা মাটির নিচে।(সেনাপতি)
.
--মানে underworld।এটাও তো কাল্পনিক বিষয়।(আমি)
.
--অনেক কিছুই আছে যেগুলো কাল্পনিক মনে হয় কিন্তু কাল্পনিক হয় না।।।সেটার প্রমাণ তো আপনি পেয়ে গেছেন।(সেনাপতি)
.
--হ্যা।(আমি)
.
--আমাদের সামনে সব ভয়ানক জিনিস অপেক্ষা করবে।যেগুলো আমাদের পার করতে হবে।(সেনাপতি)
.
--আমি একজন মানব সন্তান হয়ে কিভাবে এসব করবো।(আমি)
.
--আপনি ভুলে যাচ্ছে আপনি এখন একজন রাজা।।।জলপুরীর রাজা আপনি।।।এই পানি আপনার অধীনে এখন।শুধু আপনাকে একে অধীনস্ত করা শিখতে হবে।তাতেই হয়ে যাবে।(সেনাপতি)
.
--হ্যা।বুঝতে পারছি।(আমি)
.
--তাহলে চলেন যাওয়া যাক।(সেনাপতি)
।।।।
।।।।
।।।।
হুমমম চলেন।।।(আমি)
।।।
।।।
।।।
মাছের মতো জাহাজটা নিয়ে আমরা চলে আসলাম একটা জায়গায়।।।।এখানে মাটির নিচে অনেক বড় গর্ত।দেখে মনে হচ্ছে underworld এ ঢোকার রাস্তা এটা।
.
--তো অপেক্ষা করছেন কেনো চলুন যাওয়া যাক।(আমি)
.
--হুমমম যাবো কিন্তু এখানে রাজ দরবারের কাউকে ঢুকতে দিবে না।।।আমাদেরকে গুপ্তচর হয়ে যেতে হবে।(সেনাপতি)
.
--কেনো?(আমি)
.
--কারন মাটির নিচের দুনিয়ায় সব সময় চুরী ডাকাতি মারামারি হানাহানি হয়ে থাকে।।।পৃথিবীর মাঝে সবচেয়ে নিকৃষ্ট জায়গা এখানে।সেখানে কোনো রাজা কিংবা রাজ পরিবারের কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।।।(সেনাপতি)
.
--বুঝলাম।।।কিন্তু সেখানে থাকে কারা?(আমি)
.
--সেখানে সবাই থাকতে পারবে।।।মানুষ,জ্বীন,পরী,অদ্ভুদ প্রানী সবই দেখতে পারবেন সেখানে।(সেনাপতি)
.
--তাহলে এখন কি করতে হবে।(আমি)
.
--আপনি ভয় পাবেন না।।।আমি আমাদের সাথে জামা কাপড় নিয়ে আসছি।।।আর এই জাহাজটাও আমাদের রাজ দরবারের না।।।।আমাদের কে ঢুকতে দিবে।শুধু আপনি রাজ পোশাকটা বাইরে ফেলে দিন।(সেনাপতি)
.
--হুমমম চলুন তাহলে।(আমি)
।।।।
।।।।
আমরা সেই গর্তের মাঝে দিয়ে ঢুকে পরলাম।।।এখান দিয়েই ভিতরে যেতে হবে।।।ভাবলাম পৌছে গেছি কিন্তু না।।।আমারা নিচে নেমে চলে আসলাম বড় দরজার সামনে।।underworld এ ঢোকার জন্য তিনটা রাস্তা।।।সেনাপতি বললো একটা হলো সাহারা মরুভূমির মধ্যে যেখান দিয়ে আকাশপুরীর লোকজন যাওয়া আসা করে।।।আর একটা হলো সুইজারল্যান্ডের একটা কবরস্থানে যেখান থেকে মানুষ যাওয়া আসা করে।আর একটা এখানে।যেটা দিয়ে জলের মানুষ যাওয়া আসা করে।যাক আমরা ঢুকে গেলাম শেষ পর্যন্ত underworld এ।।।এমন পরিবেশ দেখে নিজেই মুগ্ধ হচ্ছি।।।এমন জায়গায় সবাই কিভাবে আছে সেটাই ভাবছি।
.
--এখানে মানুষ কিভাবে থাকে।।।অক্সিজেন পাই কোথায় থেকে?(আমি)
.
--এখানে উপর থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়।।।(সেনাপতি)
.
--wow।।।।।সেই একটা জায়গা।।।আমার খুব সুন্দর লেগেছে।।।(আমি)
.
--আপনি জায়গা পরে দেখবেন।।।মহান ট্রিশুলটা আপনার কাছে থাকলে এসবের রাজা আপনিই হবেন।।সব রাজারা আপনার কদমে মাথা রাখবে।(সেনাপতি)
.
--আমি তো সেসব চাই না।।।আমি তো শুধু আমার পরিবার নিয়ে থাকতে চাই।(আমি)
.
--পরিস্থিতিই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো ক্ষমতা দিয়ে দেই।চলুন আমাদের গন্তব্যে যাওয়া যাক।(সেনাপতি)
।।।।।।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((((চলবে)))))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
।।।।।।