*জলপরীর প্রেমে*
পার্ট:2
লেখক:হৃদয় বাপ্পী।
।।।।
।।।।
.
:-নানু তুমি আমাদের বিয়ে না,আমাদের বাচ্চা কাচ্চা ও দেখে যেতে পারবা।(আমি)
.
:-সেটা যদি হতো রে তাহলে তো এখনি বিয়ে দিয়ে দিতাম তোদের।কিন্তু কি পুরা কপাল।তা হবে না।(নানু)
.
:-হবে না মানে।কেনো।(আমি)
.
:-তোর এসব কিছু শুনতে হবে না।তুই যা তো হৃদির সাথে আমার কিছু কথা আছে।(নানু)
.
:-যা হৃদয় আমি নানুর সাথে কথা বলে আসতেছি।(হৃদি)
.
:-ওকে আমি নাস্তা করে নদীর পাড়ে গেলাম ছবি আকতে।(আমি)
.
:-ওকে যা।আমি ওখানেই যাবো।(হৃদি)
।।।।।
নাস্তা করে আমি চলে আসলাম আবার ও নদীর পাড়ে।কেনো জানি না এই নদীটা আমাকে শুধু তার কাছে টানে।আমাকে নামতে বলতেছে নদীতে।কিন্তু ভয় হচ্ছে একা একা।আবার ও সেই ড্রয়িং শুরু করলাম।আকা শেষ করে বসে রইলাম।ছবিটার দিকে তাকিয়ে আছি।আবারও এই জলপরী।যার চেহারাটা আমি দিতে পারি না।ঔদিক ফিরে তাকিয়ে আছে।এমন মনে হচ্ছে আমাকে ছবির ভিতর থেকেই ডাকছে।মনে হচ্ছিলো আমি ছবির ভিতরেই ঢুকে যাবো।হাত পা নাড়া চাড়া করতে পারছিলাম না।কেউ শক্ত করে পিছন থেকে জরিয়ে ধরেছে বলে মনে হচ্ছিলো।
.
:-এই হৃদু।হৃদু।এই কখন থেকে ডাকছি এক মনে ছবিটার দিকে তাকিয়ে কি ভাবছিস।(হৃদি)
.
:-কোথায় ডাক দিলি।আমি তো শুনতেই পেলাম না।(আমি)
.
:-মজা করছিস না।আচ্ছা বাদ দে।আমি এখানে বসতেছি।আমার একটা ড্রয়িং কর প্লিজ।(হৃদি)
.
:-ফ্রি ফ্রি পারবো না।(আমি)
.
:-বারে এখানে বসে রোজ ই তো দুইটা করে ছবি আকোস।তাও ফ্রি।আমার একটা ছবি একে দিতে যত সমস্যা।(হৃদি)
.
:-হুমমম।বুঝছোস তাহলে।(আমি)
.
:-শয়তান।যা একে দিতে হবে না।(হৃদি)
.
:-ওকে যা দিবো না।(আমি)
.
:-ভাই আমার ভালো।প্লিজ।আমি না আমার বান্ধুবীকে বলেছিলাম সুন্দুর একটা sketch ওদের দেখাবো তাও আমার।(হৃদি)
.
:-দিতে পারি।তবে ৫০০ টাকা লাগবে।(আমি)
.
:-তোর থেকে তো এমনি আর্টিস্ট রাই ভালো।১০০ দিলেই একে দিবে।আর তুই আমার ভাই হয়ে ৫০০ নিবি।(হৃদি)
.
:-হুমমম দিলে দে।নাহলে যা অন্য কাউকে দিয়ে আকা।(আমি)
.
:-আচ্ছা আমার সোনা ভাই।বাসায় ফিরেই তোকে ৫০০ টাকা দিবো।খুশি।(হৃদি)
.
:-হুমমমম।এখন আমি যে মুডে বসিয়ে রাখবো বসে থাকবি।(আমি)
.
:-ওকে।
।।।।।
হৃদিকে সুন্দর একটা পজিশনে বসিয়ে দিলাম।শত হোক আমারই আদরের বোন।ওর যে কত ছবি একে দিয়েছি তার হিসাব নাই।সব বার ফ্রি ফ্রি একে নেই আমাকে দিয়ে।কিন্তু এবার আমি তা হতে দিচ্ছি না।১ ঘন্টা এভাবে বসিয়ে রাখলাম।
.
:-কিরে আর কতক্ষন এভাবে বসে থাকবো।আর পারছি না।(হৃদি)
.
:-আর ৫ মিনিট।(আমি)
.
:-সেই কখন থেকে ৫ মিনিট বলতেছোস।এখনো কি হয় নাই।(হৃদি)
.
:-হুমমমম এই নে।এই ছবি দেখলে যেকোনো ছেলেই তোর উপর পাগল হয়ে যাবে।(আমি)
.
:-wow......আমার ভাইটা আমার এতো সুন্দর ছবি কিভাবে আকলো।(হৃদি)
.
:-পাম দিতে হবে না।৫০০ কিন্তু জমা পরছে।(আমি)
.
:-হুমমম।জানি।কিন্তু আমার পিছনে এই কালো জিনিসটা কি একেছোস।(হৃদি)
.
:-কোথায় দেখি।(আমি)
.
:-এইযে কালো কিছু একটা।আমার পিছনে তো এমন কিছু নাই।(হৃদি)
.
:-কি জানি আমি তো কালো কিছু একটা দেখেছিলাম।যার জন্য একেছি।(আমি)
.
:-এক ভাবে তাকিয়ে থেকে মনে হয় চোখ নষ্ট হয়ে গেছে তোর।(হৃদি)
.
:-দারা মুছে দিচ্ছি।(আমি)
.
:-মুচ্ছে না তো।(হৃদি)
.
:-কেনো খারাপ লাগছে নাতো।থাক এভাবে।(আমি)
.
:-ওকে।এই নে তোর একটা গিফট।উম্মাহহহ।(
হৃদি আমার কপালে একটা চুমু দিলো)
.
:-এই চুমু দিলি কেনো।এই চুমু শুধু আমাকে আমার বউ দিবে।(আমি)
.
:-আহারে বউ পাগল।তোর তো বিয়েই দিবে না তাহলে চুমু পাবি কোথায়।আমার থেকে নিয়েই খুশি থাকতে হবে। (হৃদি)
.
:-মানে।আমার বিয়ে দিবে না।(আমি)
.
:-আরে না হবে হবে আমি তো মজা করলাম।(হৃদি)
।।।।।
হৃদিকে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছিলো।এমন তো কোনোদিন ও দেখি নাই হৃদিকে।
.
:-কিছু হয়েছে তোর।(আমি)
.
:-আরে না।।।।একটা আবদার রাখবি আমার।(হৃদি)
.
:-হুমমম বল।(আমি)
.
:-আমার হাতটা ধরে বসবি একটু।(হৃদি)
.
:-হুমমম দে হাত।(আমি)
।।।।
হৃদির হাতটা ধরে বসে আছি।জানি না কি হয়েছে ওর।মেয়েটা একদম এমন না।বাট আজকে কেনো এমন করছে।হৃদি আমার কোলে মাথা রাখলো।
.
:-আচ্ছা হৃদু একটা কথা বলবি আমাকে।(হৃদি)
.
:-হুমমম বল।(আমি)
.
:-মনে কর জীবনের কোনো এক সময় আমাদের দুই ভাই বোনকেই বিয়ে করতে হলো।তুই কি সেটা মেনে নিতে পারবি।(হৃদি)
.
:-এসব কি বলছিস।(আমি)
.
:-না বল না প্লিজ।(হৃদি)
.
:-তোর মাথা নষ্ট হয়ে গেছে।তাই এসব বলতেছোস।আমরা ভাইবোন আমাদের কি বিয়ে হয় নাকি।এটা তো পাপ।(আমি)
.
:-আমি কি বলছি নাকি আমাদের বিয়ে হবে।কিন্তু মনে কর পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে যে আমাদের বিয়ে করতেই হবে।তখন কি তুই আমাকে বউ হিসাবে মেনে নিবি।(হৃদি)
.
:-দেখ আমার ভালো লাগছে না এসব কথা।তুই এসব কথা বললে আমি আর কথাই বলবো না তোর সাথে।(আমি)
.
:-ওকে যা বলবো না।(হৃদি)
.
:-হুমমমম।(আমি)
.
:-গোসল করবি এখানে আজ।(হৃদি)
.
:-আরে না ভয় লাগে।(আমি)
.
:-কোথায় কালকে তো ঠিকই করলাম।কোনো ভয় লাগলো না।(হৃদি)
.
:-কালকে এখানে গোসল করেছি।(আমি)
.
:-হ্যা।কেনো তোর মনে নাই।তুই ডুপ দিয়েছিলি।অনেকক্ষন পর উঠেছিলি।আমি আর খালামনি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।(হৃদি)
.
:-আমার তো মনে পরছে না।(আমি)
.
:-ওকে তোর মনে করতে হবে না।আমাকে একটু ঘুম পারিয়ে দে।(হৃদি)
.
:-ওকে আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।তুই ঘুমা।(আমি)
.
:-হুমমম।(হৃদি)
।।।।।।।
আজকে ওর কি হলো।এমন অদ্ভুদ কথা বলছে কেনো।কালকে এই পুকুরে গোসল করলাম নিজে ও তো জানি না।তারপর আমার আর ওর বিয়ের কথা বললো।এটা হয় নাকি।ও আমার বোন তো।আপন মায়ের পেটের যমজ বোন।আমার জোড়া ও।আমাদের কিভাবে বিয়ে হয়।ওর মাথা মনে হয় গেছে।নাহলে ভূতে ধরছে ওরে।
।।।।।
বসে বসে ভাবতে লাগলাম।নানী কিছু একটা বলেছে ওকে।এতো কি পার্সোনাল কথা যেটা আমাকে বললো না।কি জানি কি হচ্ছে।আমার এখানে আসলেই ভালো লাগে না।না আর আসবো না এই গ্রামে।সব কিছুতেই তাল হারিয়ে ফেলি এখানে আসলে।কি সব অদ্ভুদ জিনিস ঘটে এখানে আসলে।ভাবতে ছিলাম এসব কথা।তখনই নদীতে দেখলাম একটা বড় মাছের লেজ উপরে হাল্কা উঠেছিলো আবার নিচে নেমে গেলে।এটা কিভাবে সম্ভব।নদীতে কি এতো বড় মাছ আছে।হ্যা বড় সড় একটা মাছের লেজ দেখেছি আমি।আমাকে খুব উত্তেজিত মনে হলো।মামাকে বলতে হবে এই মাছের কথা।আমি আর হৃদি মাছ খুব পছন্দ করি।মামাকে বললে হয়তো এখান থেকে ধরে নিয়ে যাবে মাছটা।
হৃদি ও ঘুমাচ্ছে আমার কোলে।একা একা ভালো লাগছে না।হঠাৎ চারপাশে একটা সুগন্ধ পেলাম।সুগন্ধটা যেনো আমাকেই টানছে।বলছে চলে এসো আমার কাছে।মনে হলো আমার কাধে কারো হাত পরেছে।হৃদি তো আমার কোলে ঘুমাচ্ছে তাহলে কে হাত রাখলো।
হাতটা আমার খুব পরিচিত মনে হলো।মনে হচ্ছে আমার কতো কালের চেনা এই হাত।পিছু ফিরলাম কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলাম না।বাট আমি অনুভব করতে পারছি কেউ একজন আমার পাশে আছে।আমি তাকে দেখতে পারছি না,ছুতে পারছি না।কিন্তু আমার মন বলছে সে আমাকে দেখছে,শুধু দেখছে না আমার খোজা দেখে মিটি মিটি হাসছে ও সে।কিন্তু কেনো।কেনো আমার এমন মনে হচ্ছে।
তখনই হৃদির ঘুম ভেঙে গেলো।আমার দিকে চোখ রাখলো ও।দেখলো আমি আশেপাশে কিছু একটা খুজছি।
.
:-হৃদু।(হৃদি)
.
:-হ্যা।।।হুমমমমম।
.
:-কি খুজছিস।(হৃদি)
.
:-কোথায়,কিছু না।তুই উঠলি কখন।(আমি)
.
:-এই মাত্র।বল কি খুজছিস।(হৃদি)
.
:-আমার মনে হলো আমার পাশে কেউ বসে।আছে।কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলাম নাতো।(আমি)
.
:-ও কিছু না।চল এখান থেকে।অনেক বেলা হয়ে গেছে।
.
:-হুমমমম চল।(আমি)
।।।।।।
দুজনে নানা বাসায় ফিরলাম।আমি আনমনে হাটতে ছিলাম হৃদি আমার হাতটা ধরে রেখে ছিলো।বাসায় ফিরলাম।দেখি হৃদি কিছু একটা বাবাকে বললো।
.
:-হৃদয় এর মা।আমাদের আজকেই চলে যাওয়া উচিত।(বাবা)
.
:-হ্যা ঠিকই বলেছো।বিকালেই বাসায় চলে যেতে হবে।(মা)
.
কি হয়েছে তোমরা যাওয়ার কথা বলতেছো কেনো।(মামা)
.
:-হৃদয় এর উপর লক্ষন গুলো দেখা দিয়েছে।এখানে থাকা যাবে না আর।(বাবা)
.
:-ও ঠিক আছে তাহলে তো যাওয়ায় ভালো।এখানে থাকা উচিত হবে না।(মামা)
.
:-কি হয়েছে চলে যাবো কেনো।আর আমার উপর কিসের লক্ষন দেখা দিলো।(আমি)
.
:-ও কিছু না।তুই কিছু ভাবিস না।(মা)
.
:-তাহলে যাবো কেনো।আমি আজকে যাবো না।কালকে সকালে যাবো।আজকে রাত আমি এখানেই থাকবো।(কথাগুলো আমি বলতে চাই নি।কারন আমি ও থাকতে চাই নি।তাও কেনো জানি বলে ফেললাম।থাক যখন বলেছি তখন থাকলাম একরাত।কি হবে একরাতে।
.
:-আচ্ছা ঠিক আছে আজকে রাতই।কালকে সকালেই শহরে চলে যাবো।(বাবা)
।।।।।।
আমি ও খুশি মনে রুমে চলে আসলাম।সারা দিন কেটে গেলো হৃদির সাথে গল্প করতে আর লুডু খেলতে খেলতে।সারাদিনে হৃদি আমাকে একা রাখি নি।জানি না কি চলছে।কিন্তু কেমন জেনো লাগছে আমার।রাতে আমি আর হৃদি দুজনে ঘুমিয়ে পরলাম।আজকে দিনটাই কেমন জেনো কেটেছে।হঠাৎই ঘুম ভেঙে গেলো।হৃদি বলেছিলো রাতে ঘুম থেকে উঠে একা জেনো বাইরে না যায়।ওকে ডাক দিয়ে নিয়ে যায় জেনো।বারান্দা দিয়ে খুব আলো দেখা যাচ্ছিলো।এতো রাতে বাইরে কিসের এতো আলো।উঠলাম।বারান্দায় গেলাম।খুব সুন্দর জোৎসনা রাত।চাদের আলোতে সব কিছু দেখা যাচ্ছে।বারান্দায় আসার পরই আমার কানে হঠাৎ করেই কি সব শব্দ আসতে লাগলো।একটা সুগন্ধ পেলাম।কিন্তু না এটা সেই পরিচিত সুগন্ধ না।আমার কানে বাজতে লাগলো।কে জেনো বলছে।"আমার কাছে আসো।আমি তোমাকে ছারা বাচবো না।"হঠাৎ বারান্দায় একটা আলোর ঝলক দেখতে পেলাম।কিছু একটা দৃশ্যমান হচ্ছে আমার সামনে।একি এটা কি আমি স্বপ্ন দেখছি নাকি।এতো সুন্দর একটা মেয়ে।না এটা মেয়ে নই।এটা তো একটা পরী।হ্যা এটা একটা আকাশ পরী।যে পরীদের পিছনে দুটি ডানা থাকে।বিশ্বাসই হচ্ছে না আমি একটা আকাশ পরীকে দেখছি।এতো সুন্দর তার রূপ।এতো সুন্দরী মেয়ে সারা পৃথিবী খোজ করলে ও পাওয়া যাবে না।আমাকে মুগ্ধ করে ফেলছে পরী।আমি তার উপর আকৃষ্ট হয়ে পরলাম।কিছুতেই চোখ ফেরাতে পারছিলাম না।কিন্তু আমার মনে কেমন জানি অস্থিরতা ছিলো।আমার মন তখন ও সেই পরিচিত সুগন্ধটা পেতে চাই।হয়তো আমার মনের কথা বুঝেই পরীটা কথা বলতে শুরু করলো।
।।।।।।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(চলবে)
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
।।।।।।