*জলপরীর প্রেমে*
পার্টঃ১৪
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)
।।।।।
।।।।।
।।।।।
হঠাৎ একটা বিকট আওয়াজ হলো।।।।ভিতর একপাশের দেওয়াল হতে শব্দ আসতে লাগলো।
.
--আওয়াজ হলো কিসের?(আমি)
.
--এটা দানবদের আওয়াজ ছিলো।।।।।(আনিল)
.
--এখন কি করবো আমরা।(আমি)
.
--কি করবো মানে এদিকে আমার কাছে হাত দাও।(নিলা)
.
--কেনো?(আমি)
.
--দিতে বলছি তাই।(নিলা আমার হাত নিয়ে ওর হাতে থাকা ছোট একটা চাকু দিয়ে আমার হাতটা কেটে দিলো।।।চুপচুপ করে রক্ত পরছে)
.
--আাহহহহহহ।।।।এটা কি হলো।।।আমার হাত কাটলেন কেনো।(আনিল তার কাছে থাকা অস্ত্র তাক করলো নিলার দিকে)
.
--তাছাড়া উপায় নেই।।।কোনো মানবের রক্ত ছাড়া এই দেওয়াল খুলবে না।(নিলা)
.
--তাই বলে আমার রক্ত।(আমি)
.
--বেশী কথা না বলে দেওয়াল টাই হাত রাখুন।বেশী দেরী করলে রক্ত বের হয়ে আপনি মারাও যেতে পারেন।(নিলা)
.
--আনিল শান্ত হোন।।।।কিছুই হয় নাই আমার।।।।(আমি দেওয়ালে রক্তমাখা হাত দেওয়ার সাথে সাথেই দেওয়াল দুই ভাগ হয়ে গেলো।।।একটা রাস্তা হয়ে গেলো)
.
--নিন হাতটা দিন এখন আমার কাছে।(নিলা)
.
--আবার ও কি কাটবেন।(আমি)
.
--না দিন তো।(নিলা)
.
--হুমমম নিন।(আমি)
।।।।।
।।।।।
নিলা ওর জামার একটা অংশ ছিড়ে আমার হাতে বেধে দিতে লাগলো।।।মেয়েটার মধ্যে সত্যিই অনেক মায়া।।।।কিন্তু অনেক অদ্ভুদ মেয়েটা।।।কখন কোন সময় কি করে বুঝতেই পারছি না।।।।হাত বেধে দেওয়ার পরে।।।
.
--চলুন বেশী সময় এই দেওয়াল খোলা থাকবে না।(নিলা)
.
--হুমমম চলুন।(আনিল)
.।।।।
।।।।
আমি আর আনিল সামনা সামনি হাটতে থাকলাম।নিলা পিছনে।
.
--হুজুর আমার কিন্তু এই মেয়েটার কাজ কর্মে অনেক সন্দেহ হচ্ছে।(আনিল)
.
--কেনো?(আমি)
.
--দেখছেন না কত অদ্ভুদ।।।আর এই সব বিষয়ে ও জানে।।।এতো কিছুর খোজ কোথায় পেলো।।।হয়তে আমাদের সামনে সমস্যা হতে পারে ওর জন্য।(আনিল)
.
--হুমমম হয়তো।।ও যেহেতু অনেক কিছু জানে।।।আমাদের সাহায্য হবে ওর দ্বারা।।।আর ও অর্ধেক পরী।।।সামনে আমাদের বিপদে রক্ষা করতে পারবে ও।।।আর দেখছেন তো অনেক সুন্দর তীর চালাতে পারে ও।(আমি)
.
--হুমমম দেখলাম তো।(আনিল)
.
--আমাদের গন্তব্য ওর কাছে গোপন রাখলেই হবে।।।একবার আমাদের প্রাপ্য জিনিসটা পেয়ে যায়।তারপর ও ওর জায়গায় আমরা আমাদের।(আমি)
.
--হুমমম কিন্তু।(আনিল)
.
--আর কোনো কথা না বলায় ভালো।।।।হয়তো কিছু শুনে ফেলতে পারে।(আমি)
.
--হ্যা।চলুন আমরা দানবদের দুনিয়ায় চলে আসছি।(আনিল)
.
--এতো সুন্দর হবে দানবদের দুনিয়া সেটা ধারনাই করি নাই।(নিলা)
.
--কেনো আপনি আসেন নি আগে কখনো?(আমি)
.
--না।।।।(নিলা)
.
--তাহলে এতো কিছু জানেন।(আমি)
.
--আমি বলেছিলাম না।।।আমার আম্মা এসেছিলো একবার।।।তার থেকেই শুনেছিলাম কোথায় কি করতে হয়।।।(নিলা)
.
--ওওওও।(আমি)
.
--তবে আপনাকে সাবধান থাকতে হবে।।।এখানের দানবরা মানুষদের প্রবেশ করতে দেই না।।ওরা যদি বুঝে যায় আপনি মানুষ তাহলে আপনাকে মেরে ফেলবে।(নিলা)
.
--সেটার ভয় আপনাকে পেতে হবে না।।।আমরা দানবদের দুনিয়ায় যাওয়ার অনুমতি আগে থেকেই নিয়ে এসেছি।(আনিল)
.
--সেটা কিভাবে।(নিলা)
.
--কোনো একভাবে এনেছি।(আমি)
.
--ও তাহলে আর কি তাহলে চলুন যাওয়া যাক।(নিলা)
.
--হুমমম চলুন।(আমি)
।।।।
।।।।
আমরা দানব রাজ্যে ঢুকে গেলাম।।।সুন্দর বলতে অনেক সুন্দর এই দানব রাজ্য।কিন্তু সমস্যা হলো সব কিছু আমাদের থেকেও ৩০ গুন বড়।আগে শুনেছি এরা আরো বড় ছিলো।।।কিন্তু আমাদের মতো এখন এরাও খাটো হয়ে গেছে।এদের ও আয়ু কমে গেছে আগের তুলনাই।
।
যাইহোক আমাদের যেতে হবে সেই তালাওয়ালা দানবের কাছে।এই তালা শুধু তার বংশের লোকেরাই এরকম তালা বানাতে পারে।।।।আমরা তার কাছে চলে আসলাম।।একটা গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে এখানের রাজা।।।তার সাথে অনেক আগেই কথা হয়েছে আমাদের।।শুধু দেখা করতে পারলাম না নিলার জন্য।
.
--আচ্ছা এই গাড়িটাকে তো মনে হচ্ছে এখানের রাজ প্রাসাদের গাড়ি।।।যার জন্য সব দানবরা আমাদের রাজ অতিথি মনে করে সম্মান দেখাচ্ছে।(নিলা)
.
--হুমমম।(আমি)
.
--আপনারা হয়তো কোনো রাজ্যের রাজ দরবারের কেউ?(নিলা)
.
--আরে না।।।(আনিল)
.
--দেখুন আমাকে বলদ বানাবেন না।(নিলা)
.
--আরে আপনি তো আসলেই বলদ।।।আপনি যে সেদিন আনিলকে নিয়ে নিচের দুনিয়ার সেনা কক্ষে ঢুকেছিলেন।।।আনিল খুজতেছিলেন সেই নকশা।আর সাথে সাথে আকাশপরীদের বার্তা পাঠানোর একটা ঘামও পেয়ে গিয়েছিলেন যেখানে রাজার দেওয়া একটা সিল ও ছিলো।।।।সে শুধু সেখানে লেখে দিয়েছিলো আমাদের রাজ্য থেকে তিনজন আসবে এখানে তাদের একটা কাজে আর আপনাদের সাহায্য দরকার।(আমি)
.
--ও তাই তো বলি।।।তার রাজ দরবারের লোকজন ছাড়া কাউকে সাহায্য করে না শুনেছিলাম।।।এজন্য তো আমাদের সাহায্য করছে।(নিলা)
.
--হুমমম।(আমি আর আনিল হাসছি)
.
--নিন আপনাদের গন্তব্যে চলে এসেছি।(ছোট একটা দানব ড্রাইভার)
.
--হুমমম ধন্যবাদ।।।তবে এই বিশাল গাড়ি থেকে আমাদের একটু তারাতারি নামিয়ে দিলে ভালোই হতো।(আমি)
.
--আমি নামিয়ে দিচ্ছি।(দানব)
।।।।
।।।।
দানবটি আমাদের নামিয়ে দিলেন।।।।আমরা চলে আসলাম সেই দানবটির বাসার সামনে।।।বিরাট একটা বাড়ি।।।উপরে তাকিয়ে শেষ দেখা যায় না।।।যাক হোক জোরে ডাক দিতে শুরু করলাম।
.
--কে ডাকছে আমাকে।।।(দানব)
.
--আমরা।(আনিল)
.
--একি তিনজন মানব সন্তান এখানে কত বড় সাহস তোদের।(দানব)
.
--আমরা কোনো মানব সন্তান নই।আমাদের বার্তা তো মনে হয়ে পেয়েই গেছেন।(আনিল)
.
--ও তাহলে আপনারা জলপুরী থেকে এসেছেন।(দানব)
.
--হ্যা।(আমি)
.
--আসুন আসুন বসুন।।আমি বেশী কথা বলবো না।।।কারন এসব বিষয় গোপন রাখতে হবে।।।অন্য দানবরা যদি শোনে আপনারা হারকিউমাসের গুপ্তধনের নকশার লক খুলতে এসেছেন তাহলে আপনাদের এখানে থেকে কেউই বাচাতে পারবে না।(দানব)
.
--আপনি তারাতারি আমাদের নকশাটা খুলে দিন।(আমি)
.
--হ্যা।।।কিন্তু আমার ৩ টা প্রশ্নের জবাব দিতে হবে তোমাকে যদি খুলে নিতে চাও লকটা।(দানব)
.
--এটা আবার কেমন কথা।(আমি)
.
--এটা আমি ইচ্ছা করে জিজ্ঞাসা করছি না।।।।এটা হারকিউমাসেরই ইচ্ছা ছিলো।।তিনি এই তিনটা প্রশ্ন আমার পূর্বপুরুষের কাছেই দিয়ে গিয়েছিলেন।।।(দানব)
.
--ঠিক আছে বলুন আপনার প্রশ্ন।(আমি)
.
--পৃথিবীতে এমন কয়টা জায়গা আছে যেখানে চাদের মর্ধাকর্ষন বলের মতো?(দানব)
.
--এটা কেমন প্রশ্ন।।।এমন প্রশ্ন তো আগে কখনো শুনি নি।(আমি)
.
--পরের প্রশ্ন কিভাবে হারকিউমাস মানুষ থেকে মহাজাগতিক রাজা হয়েছেন?(দানব)
.
--এটা তো আনিল বলতে পারবেন।(আমি)
.
--সরি হুজুর।।।।তবে এই প্রশ্নের উত্তর সবার কাছে অজানা।(আনিল)
.
--আচ্ছা পরের প্রশ্ন কি?(আমি)
.
--এটাই শেষ প্রশ্ন।মানুষের মধ্যে দুই শ্রেনীর মানুষ আছে।তারা কারা?(দানব)
.
--দুইটা প্রশ্ন তো আমার অজানা।।।কারন একটা পৃথিবী নিয়ে আর একটা বিষয় হলো হারকিউমাস রাজাকে নিয়ে।।।।তবে মানুষের এটা তো উত্তর দিতে পারি।(আমি)
.
--এই নকশার উপরে হাত রেখে।যেকোনো দুইটা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলেই এটার লক এমনি এমনি খুলে যাবে।(দানব)
.
--ও ধন্যবাদ আপনাকে।(আমি)
।।।।
।।।।
হঠাৎই দানবের দরজাই করঘাত হলো।।।।দানব দরজার ফুটো দিয়ে বাইরে তাকালো।।।
.
--আমাদের সেনার সাথে নিচের দুনিয়ার সেনাও এসেছে বাইরে।(দানব)
.
--তার মানে তারা বুঝে গিয়েছে আমরা এখানে আছি।আমাদের বের হতে হবে এখানে থেকে।(নিলা)
.
--তোমরা কোনো চিন্তা কইরো না।।।সবাই এই দরজা দিয়ে ঢুকো।।।দেখবা মানুষের দুনিয়ায় চলে যাবা।।।।আর দুইটা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলেই খুলে যাবে ঔটা।(দানব)
.
--আপনাকে আমাদের সাহায্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।(আনিল)
।।।।।
।।।।।
আমরা ঢুকলাম সেই দরজা দিয়ে।।।হাটতে ছিলাম।।।সামনে একটা দরজা আসলো।।।দরজাটা খুললাম একটা লাইব্রেরীর মধ্যে চলে আসলাম।।।
.
--যাইহোক এখানে আসলাম আমাদের প্রশ্নের জবাব এখানেই পেয়ে যাবো।(নিলা)
.
--আমাদের শুধু পৃথিবীর বিষয়ক কিছু বই লাগবে।।।।চাদের মতো অবস্হা কোথায় আছে?(আমি)
।।।।
।।।।
অনেক গুলো বই দেখলাম।তারপরও পেলাম না কিছুই।।।আচ্ছা চেষ্টা তো করা যায় হাত দিলাম নকশাটাই
.
--মানুষ দুই রকমের।।।আচ্ছা রাজা হারকিউমাস রাজা ছিলেন।।।আমিও তো।।।আমাকে তার মতো ভাবতে হবে।মানুষ কেমন হতে পারে।।।।।হ্যা মানুষ এক শ্রেনীর যারা সব সময় ক্ষমতার লোভী হয়ে থাকে।।।যারা নিচের পোস্টে থাকলে সব সময় উপরে যাওয়ার লোভ করে।।।তারা ক্ষমতা পাওয়ার লোভে সব কিছুই করতে পারবে।আর এক শ্রেনী আছে যারা স্বার্থ নিয়ে থাকে।।নিজের পাশে কোনো মানুষের বিপদ দেখলেও এরা সাহায্য করতে এগিয়ে আসে না।।।বরং নিজের কিভাবে স্বার্থ রক্ষা হবে সেটা নিয়েই ভেবে থাকে।(আমি)
.
--দেখুন লক একটা খুলে গেছে।।।মানে উত্তর সঠিক হয়েছে।(নিলা)
.
--আমি তো ধারনা করলাম আর সঠিক হয়ে গেলো।(আমি)
.
--তাহলে পরের দুইটা কি হতে পারে।(আনিল)
.
--আচ্ছা এমন জায়গা যেটার কথা হারকিউমাস বলে গেছেন তাই না।।।আচ্ছা এমন কোন জায়গা আছে যেখানে রাজা হারকিউমাস বেশী সময় থাকতে পছন্দ করতেন।(আমি)
.
--সেটা তো নিচের দুনিয়া ছিলো।।।যেটা তার যজ্ঞ করার জায়গা ছিলো।(আনিল)
.
--তাহলে সেটাই উত্তর হবে।।।পৃথিবীর মধ্যে চাদের ন্যায় জায়গা হলো নিচের দুনিয়া।(আমি)
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(চলবে)
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।