*জলপরীর প্রেমে*
পার্টঃ১৯
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)
।।।।।
।।।।।
।।।।।
নিলার পাশে বসে নিলাকে ডাক দিলাম।।।নিলা আমার ডাক না শুনে উল্টো আমার হাতটা জরিয়ে ধরলো।।।ধুর কি ঝামেলা।।ডাক দিলাম জোরে।
.
--কি হলো ডাকছো কেনো?(নিলা)
.
--উঠতে হবে তাই।(আমি)
.
--কি এমন হলো যে আমাকে উঠতে হবে।(নিলা)
.
--অনেক কিছুই হয়েছে।(আমি নিলাকে বল্লাম যা হয়েছে সেটা)
.
--এতো খুব ভালো সংবাদ।।কোনো রকম যুদ্ধ ছাড়াই সমাধান হয়ে যাবে।(নিলা)
.
--হ্যা কিন্তু বুঝতে পারছি না জারাকে আমি কি বলবো।(আমি)
.
--তুমি যদি বলো আমার কোনো সমস্যা নাই তুমি আর জারা যদি রাজি থাকো তাহলে দুইজন বিয়ে করতে পারো।(নিলা)
.
--এটা কি করে হয় দুইজন কে বিয়ে করা মানে কি জানো।।।।এখন ব্যাপারটা এমন হলেও পরে বিষয়টা অনেক দূর গরাবে।।(আমি)
.
--তাই বলে আমি এভাবে তোমার আর জারার মাঝে আসতে চাই না।আগে যদি জানতাম তোমার মনে কেউ আছে তাহলে যেভাবেই হোক বিয়েটা আটকাতাম।(নিলা)
.
--যা হওয়ার তা তো হয়ে গেছে।(আমি)
.
--দেখো তোমার জীবন তোমার ইচ্ছা।।।আমি শুধু শুধু তোমার জীবনটা নষ্ট করতে চাই না।(নিলা)
.
--আরে চুপ করো তো।।।যা হয়েছে হয়ে গেছে।।।সামনে যা হবে সেটাও দেখা যাবে।।।এখন কাল আমাদের যেতে হবে আকাশপুরীতে।(আমি)
.
--অনেক ইচ্ছা ছিলো আকাশপুরী ঘুরে আসার সেটা পূর্ন হয়ে যাবে।(নিলা)
.
--হুমমম।।।(আমি)
.
--চলো তোমাকে আজকে পুরো নিচের দুনিয়া ঘুরে ঘুরে দেখাবো।(নিলা)
।।।।।
।।।।।
সারাদিন নিলার সাথে পাতালপুরী ঘুরে ঘিরে দেখতে লাগলাম।।।।দিনটা এভাবেই কেটে গেলো।।।পরের দিন টেলিপর্টেশন যন্ত্রের সামনে দাড়িয়ে আছি আমি,নিলা,রাজা আর কয়েকজন সৈন্য।।।।আনিল কে বলেছিলাম ওর নাকি শরীর খারাপ খুব।।।তাই আসতে পারি নি উনি।।।তো কি নিজের বোন আর জারাকে আজকে মুক্ত করে নিয়ে আসবো এর থেকে বড় খুশির ব্যাপার কি হতে পারে।।।।আমরা সাথে সাথেই আকাশপুরীতে চলে আসলাম।অনেক সুন্দর লাগছে সব কিছু দেখতে।।।এতো অদ্ভুদ সব জিনিস যে দেখতে পাবো এটা কল্পনাও করতে পারি নাই।আকাশপুরীর রাজা সয়ং আমাদের নিতে চলে আসছে।
.
--কেমন আছেন জলপুরীর রাজা হৃদয় টিটান।(রাজা২)
.
--ভালো কোথায় রাখলেন।(আমি)
.
--জ্বী আমার কন্যার কাজে আমি অনেক লজ্জিত।।।আমার মেয়ের ভুলটা মাফ করবেন।(রাজা২)
.
--ঠিক আছে।।।ভুল যখন বুঝতে পারছেন তাতেই আমি খুশি।(আমি)
.
--হুমমম তাহলে চলুন রাজ প্রাসাদে যাওয়া যাক।(রাজা২)
.
--আমার সেটার জন্য সময় হবে না।।।আমি এখনি আমার বোন আর রাজকুমারীকে নিয়ে আমার দেশে,আমার বাসায় ফিরতে চাই।(আমি)
.
--সেকি এখনি কেনো?(রাজা)
.
--মাত্র তো এলেন।।।(রাজা২)
.
--না আমার বাবা-মা অনেক চিন্তা করতেছেন।আমি তাদের কাছে বোনকে দিয়ে আসতে চাই।(আমি)
.
--ওকে যেমন আপনার ইচ্ছা।।।(রাজা২)
।।।।
।।।।
আমার কাছে জারা আর হৃদিকে এনে দেওয়া হলো।।।ওরা দুজনই আমাকে দেখে জরিয়ে ধরলো আমাকে।।।চোখ দিয়ে পানি পরছে ওদের।।।বোঝায় যাচ্ছে অনেক কেদেছে ওরা।।।।আমি রাজাকে বলে টেলিপোর্টেশন যন্ত্র দিয়ে সোজা আমার বাড়ির সামনে চলে আসলাম।।।সাথে আসলো নিলা,হৃদি আর জারা।।।
।
আমি বাসায় ঢুকলাম।।।বাবা আর আম্মু আমাদের দেখে যে কত খুশি হয়েছে সেটা তাদের মুখ না দেখলে বোঝা যাবে না।।।তাদের কান্না আটকায় কে?
.
--দেখ যা হওয়ার হয়েছে এখন থেকে আর বাসার বাইরে যেতে দিবো না তোদের।(বাবা)
.
--বাবা আমি এখানে থাকলে তোমাদের বিপদ হবেই।।।।আমাকে যেতে হবে।(আমি)
.
--মানে কোথায় যাবি তুই।(আম্মু)
.
--আমি যে রাজা এখন।।।আমাকে আমার রাজ্য সামলাতে হবে।।।।(আমি)
.
--কি সব হাবিজাবি বলতেছোস।(বাবা)
.
--মনে নেই আমাকে ত্যাগ করার শর্তেই তো আমাদের জীবিত করেছিলে।।।এখন সেই শর্তটা তে মানো।।।।তোমাদের জন্য তো ছিলামই।।।যেখানে আমার দরকার এখন তো আমাকে সেখানে যেতে হবে।(আমি)
.
--আজকের রাতটা তো থাক এখানে।(বাবা)
.
--না সেটাও হবে না।।।আমাকে রাজকুমারী কে নিয়ে যেতে হবে তার রাজ্যে।আর হ্যা এইযে এটা তোমার বউমা,,,,পাতালপুরীর রাজকন্যা।(আমি নিলাকে দেখিয়ে বল্লাম)
.
--আমাদের না জানিয়ে বিয়ে ও করে ফেললি।(বাবা)
.
--না জানিয়ে না।।।নিজের জীবন বাজি রেখে বিয়ে করতে হয়ছে ওকে।।।সে অনেক কাহিনী একদিন তোমাদের কাছে সময় নিয়ে বলবো।(আমি)
.
--ঠিক আছে কিন্তু সাবধানে থাকিস বাবা।।।আমাদের মাফ করে দিস।।।আমরা কখনো এই জিনিস চাই নি।।।কিন্তু তোরা তাও বেচে থাক এটাই চেয়েছি আমি।(বাবা)
.
--দেখো চিন্তা কইরো না।।।আমি এখন হৃদয় না।।।আমি এখন একজন রাজা।।।হয়তো মহান হতে পারি নি।।।তবে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।(আমি)
.
--হুমমম দোয়া করি সব সময় ভালো থাক।।।আর সময় পেলেই আসবি।(আম্মু)
।।।।
।।।।
আম্মু আর বাবাকে বিদায় দিয়ে চলে আসলাম।।।বেশী কথা বারালাম না।।।হৃদি এখনো ভয়ে আছে আম্মুকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ছিলো ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে আসছি।।।।ওদের সবার থেকে আলাদা থাকতে হবে এখন থেকে।।।।।
।
দেখি জারার মুখটা কালো হয়ে গেছে।।।চোখ দিয়ে পানি পরছে।
.
--জারা?(আমি)
.
--.....(কোনো কথা বলছে না)
.
--জারা প্লিজ শোনো না।।।(আমি)
.
--কি শুনবো আমি বলো।আর তো কিছু শোনার নাই।(জারা)
.
--দেখো জারা এখানে ওর কোনো ভুল ছিলো না।।।(নিলা)
.
--আমি অন্য কারো কাছ থেকে কিছু শুনতে চাই নি।(জারা)
.
--জারা এখানে আমার কোনো ভুল ছিলো না।।।আমার সম্পূর্ন ইচ্ছার বাইরে বিয়েটা হয়েছে।।আমি লড়াইয়ে ওদের সেনাপতিকে হার মানিয়েছি আর ওকে বিয়ে না করলে ওর বাবা আমার রাজ্যে যুদ্ধ ঘোষনা করে দিতো।(আমি)
.
--তাতে কি তুমি ভয় পাও।(জারা)
.
--ভয় পাই সেটা না।।।সেখানে রাজা নাই সেনাপতিও তো নাই।।।কিভাবে প্রতিরোধ করবে জলপুরী।।।।তাই বাধ্য হয়ে বিয়েটা আমাকে করতে হয়েছে।(আমি)
.
--ভালো বিয়ে যখন করেছে ভালো করেছো।।।তো আমাকে বলার কি আছে।(জারা)
.
--জারা আমি ওকে বলেছি আমার জন্য যদি তোমাদের কোনো সমস্যা হয় তাহলে আমি সরে যাবো।।।তোমরা নাহয় দুজন দুজনে রইলে।।।আর এমনিতেও আমি তো আর জলে থাকতে পারবো না।।।তোমার কাছেই তো থাকবে সব সময় ও।।।।আমার কাছে নাহয় কিছুটা সময় থাকলো।(নিলা)
.
--তুমি কেমন হ্যা।নিজের স্বামীর ভাগ দিতে চাচ্ছো।(আমি)
.
--কেনো ভাগ কি ও চাই না।।।ভালোবাসলে সবাই ভাগ চাই আমি শুধু আমার কাজটাই করছি।এটা তুমিও খুশি থাকবে জারাও খুশি থাকবে(নিলা)
.
--তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার বিষয়টা বোঝার জন্য।।।আর হ্যা তুমি ঠিকই বলেছে।।।(জারা)
.
--......(আমার দুজনের বিষয়টা খারাপ লাগছে।।।মনে হচ্ছে দুই নাম্বার বিয়ে করা লাগতে পারে আমার)
.
--কি হলো তুমি চুপ কেনো?(নিলা)
.
--না আমি এমনিতেই চুপ।।।তোমরা যেহেতু বুদ্ধি করেই নিয়েছো দুজন সতিন হবা আমার কি সমস্যা তাহলে।(আমি)
.
--হুমম কিন্তু আমার একটা কথা আছে যখন ও আমার কাছে থাকবে তখন তুমি ওর জারার কোনো খোজ আর জারা তুমি ওর কোনো খোজ নিতে পারবে না।কিন্তু আমি সব সময়ই ওর খোজ খবর কথা বার্তা বলতে পারবো।।।যদি এই শর্তে রাজি থাকো তাহলে আমি ওর ভাগ তোমাকে দিতে রাজি আছি।(নিলা)
.
--হুমমম আমি রাজি।(জারা)
.
--তাহলে এখন থেকে আমরা দুজন বোন।(নিলা)
.
--হুমমম।(জারা)
।।।।
।।।।
দুজন সেই হাসিমুখে গল্প করছে।।।আমি জলপুরীতে ফোন দিলাম একটা জাহাজ পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য।।।।একটা জাহাজ আসতেছে আমাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য।।।নিলাকে আজকে নিয়ে যাবো জলপুরী দেখাতে।।।অনেক ভালো লাগবে ওর হয়তো দেখলে।।
।
কিছুক্ষন পরই আমাদের জাহাজ চলে আসলো।।আমরা এতোক্ষন দারিয়ে ছিলাম বাসার পিছনে সেই জঙ্গলের পুকুরের পাশেই যেখান দিয়ে আমি আর জারা বাসায় এসেছিলাম।জাহাজে উঠে আমরা চলে আসতে লাগলাম জলপুরীতে।।।।
।
।
অনেকটা দূর আসার পরই আমাদের জাহাজে হঠাৎ আক্রমণ হলো।।।আমি জাহাজ চালক সৈন্যকে বল্লাম কি হয়েছে।।।
.
--হুজুর মনে হচ্ছে আমাদের জলপুরীর পাশের রাজ্য আমাদের উপরে হামলা করেছে।(জল মানব)
.
--এতো বড় সাহস রাজার উপর হামলা।(আমি)
.
--হুজুর ওনাদের কাছে আধুনিক সব অস্ত্র আমাদের জাহাজটাকে এখনি উড়িয়ে দিতে পারবে।(জল মানব)
।।।।।
।।।।।
যা বলার সাথে সাথেই একটা বোমা মেরে দিলো আমাদের উপরে।।।আমাদের জাহাজ দুখন্ড হয়ে গেলো।।।কোনো রকমে নিলা আর জারা কি নিয়ে উপরে উঠলাম।।।কিন্তু
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((((চলবে)))))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।