*জলপরীর প্রেমে*
পার্টঃ১০
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)
।।।।।
।।।।।
।।।।।
গান শেষ করলাম।।।পুরো ক্লাস করতালি দিলো।।।এখন একটু রাগ কমেছে।।।তাও জারার দিকে তাকাচ্ছি না।।।ও হয়তো বুঝে গেছে অনেকটা রাগই আমি করেছি।।।পুরো ক্লাস শুধু জারা আর শান্তার দিকে তাকিয়ে আছে।।কারন দুজনেই ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দর মেয়ে।।।কিন্তু দুজনই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।।।আমি কোনো রকম পাত্তা দিচ্ছি না।।ক্লাসটা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই আমি বের হয়ে গেলাম ক্লাস থেকে।।।আজকে আর ক্লাসটা ভালো লাগছে না।।।জারা আর হৃদি অনেকটা অবাক হয়ে গেলো কারন ওদের সাথে কথা না বলেই আমি বাইরে চলে আসলাম।।।এবার ঠিকই বুঝে গেছে আমি অনেকটা রেগে গেছি।।।ব্যাগে ড্রয়িং করার জিনিস গুলো ছিলো।তা নিয়ে সোজা কলেজের পুকুর পাড়ে চলে আসলাম।।
।
বসে বসে ড্রয়িং করার চেষ্টা করছি।।।হঠাৎই দেখি আমার পাশে এসে একটা মেয়ে বসলো।
.
--তুমি এখানে কেনো?(আমি)
.
--তখন ক্লাসে শুনলাম তুমি রেগে আছো।।।আমার সাথে কি রাগ করেছো?(শান্তা)
.
--তোমার সাথে রাগ করবো কেনো আমি।(আমি)
.
--না এমনি ভাবলাম।।।তো কার উপরে এতো রাগ করেছো?(শান্তা)
.
--কারো উপরই না।।(আমি)
.
--কেউ মিথ্যা বললে কিন্তু আমি এমনিই বুঝতে পারি।।(শান্তা)
.
--কিভাবে বুঝো?(আমি)
.
--জানি না।।।কিন্তু এটা বুঝতে পারছি তুমি অনেক রেগে আছো আর কেনো সেটা আমাকে বলতে চাচ্ছো এখন।(শান্তা)
.
--কে বললো আমি বলবো তোমাকে আমি কেনো রেগে আছি।(আমি)
.
--বন্ধু ভেবে বলবা।(শান্তা)
.
--আমার ইচ্ছা নেই বলার।(আমি)
.
--ওকে যাও বলতে হবে না।।।তুমি তো অনেক সুন্দর ছবি আকতে পারো।।।আমার একটা ছবি একে দিবে?(আমি)
.
--এটাও কি বন্ধু ভেবে?(আমি)
.
--হ্যা একটা প্লিজ।(শান্তা)
.
--ওকে ঠিক আছে।।।বাট একটাই।।।।
।।।।
।।।।
আমি ওর একটা ছবি আকতে শুরু করলাম।।।বেশী সময় লাগলো না।।কোনো রকম হয়েছে ছবিটা।
.
--এটা তো একদম সুন্দর হয়েছে।এতো সুন্দর কিভাবে আকতে পারো।(শান্তা)
.
--জানি না।।।এমনিই হয়ে যায়।(আমি)
.
--হুমমম বলতে হবে গান ও সুন্দর গাইতে পারো আবার ছবিও সুন্দর আকতে পারো।(শান্তা)
.
--আরে তুই এইখানে আমি আর জারা তোকে সেই কখন থেকে খুজছি।(হৃদি)
.
--কেনো আমাকে খোজার কি আছে যা না ঔ ছেলে দুইটা দারিয়ে আছে গল্প কর যা।(আমি)
.
--আরে ভাই রাগিস না আর।।।তোকে তো একটু রাগানোর জন্য তখন একটু গল্প করেছিলাম তুই তো বেশীই হট হয়ে গেলি।(হৃদি)
.
--দেখ কথা বলবি না তোরা আমার সাথে।(আমি)
.
--সরি।(জারা ছোট একটা সরি বললো আমাকে)
.
--বাদ দে তোদের সরি।।।তোরা নতুন বন্ধু বানিয়ে নিয়েছিস আমিও একটা বানিয়েছি।।।দেখ এইটা আমার ফ্রেন্ড ওর নাম শান্তা।(আমি)
.
--হাই।(শান্তা)
.
--আর শান্তা ও আমার বোন হৃদি আর ও হৃদির বান্ধুবী জারা।(আমি)
.
--হাই।(হৃদি)
.
--যা ঔযে তোদের নতুন দুই বন্ধু দারিয়ে আছে মনে হয় গল্প করবে তোদের সাথে।(আমি)
.
--বাদ দে তো ভাই ওদের।।।তুই রাগ ফেলে দে না।।।আরেকটা গান শোনা আমাদের।(হৃদি)
.
--তোর গান তোর কাছে রাখ।।।আমি কিছুই শুনতে চাই না।।।শান্তা চলো তো এখান থেকে।।।দুইজন দুইজনের মতো থাকুক।(আমি)
.
--হুমমম চলো।।।(শান্তা)
....
।।।
শান্তার সাথে করে চলে আসলাম ওদের দুইজনের থেকে।।।আমি শান্তার সাথে আসতে চাই নি।তাও তখন জারা যেভাবে ঔ ছেলেটার সাথে হাসি মুখে গল্প করলো আমিও দেখাবো ওকে কতটা কষ্ট এতে পেতে হয়।শান্তা দেখি খুব খুশি।।যাক এবার একটু রাগ কমেছে।কারন ও হয়তো বুঝতে পারছে তখন কতটা কষ্ট আমি পেয়েছি।কারন আমি ওর চোখ দেখেই বুঝতে পারছি।ওর চোখ লাল হয়ে গেছে।একটু বেশীই লাল হয়ে গেছে।মনে হচ্ছে কান্না করে দিবে।।
.
--আচ্ছা শান্তা তুমি যাও এখন।(আমি)
.
--হুমমম বুজে গেছি কিছু চলছে তোমার বোনের বান্ধুবীর সাথে তাই না?(শান্তা)
.
--আরে না তেমন কিছু না।।।(আমি)
.
--আমাকে বোকা পেয়েছো।ওকে রাগানোর জন্যই তো আমার সাথে আসলে তুমি আর ওর চোখ তো আমি খেয়াল করেছি আমার সাথে এসেছো বলে কান্না করার মতো চোখ করে ছিলো।(শান্তা)
.
--এমন কিছুই না।(আমি)
.
-হুমমম জানি কেমন।(শান্তা)
.
--আচ্ছা যেটা ভাবছো ভাবো।।কিন্তু আমি এখন বাসায় যাবো।(আমি)
.
--আবার ও যদি একা রিক্সা না পাও।(শান্তা)
.
--না পাবো।(আমি)
.
--আরে এমন করো কেনো।।।আমি তোমার ফ্রেন্ড তাইনা।।।তাহলে আমার সাথে যেতে তো তোমার কোনো সমস্যা নাই।(শান্তা)
.
--ওকে বুঝতে পারছি আমাকে নিয়েই যাবা।ওকে ঠিক আছে চলো।(আমি)
।।।।
।।।।
দুজনে রিক্সায় করে বাসায় আসলাম।।।।আমি বাসায় নেমে গেলাম।ও ওর বাসায় চলে গেলো।
.
--কিরে আজকে একা কেনো।(আম্মু)
.
--এমনি আমার খারাপ লাগছিলো তাই চলে আসছি কলেজ থেকে।(আমি)
.
--জারা আর হৃদি কোথায়?(আম্মু)
.
--ওরা কলেজেই আছে।(আমি)
.
--ওওও।আচ্ছা তুই রেস্ট নে।(আম্মু)
.
--হুমমম।কিছু খাওয়ার জন্য দিয়ে এসো তো আমার রুমে।(আমি)
.
--হুমম ফ্রেস হয়ে নে।(আম্মু)
।।।।
।।।।
ফ্রেস হয়ে বসে রইলাম।।।এখনো রাগ কমে নাই।যখনই ভাবছি সকালের কথা রাগ আরো বেড়ে যাচ্ছে।ও কিভাবে কথা বললো ঔ ছেলেটার সাথে।।।ঔভাবে হেসে কথা বলার কি ছিলো।।।আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নাই।কিছু খেয়ে দিলাম একটা ঘুম।।।এক ঘুমে বিকাল হয়ে গেলো।।।বিছানা থেকে উঠলাম।।।বেলকনিতে গিয়ে দারালাম।।।ঠান্ডা বাতাসটা খুব ভালো লাগছে।।রুম থেকে বাইরে বের হতে যাবো তখনই জারা আমার রুমে ঢুকলো।
.
--আরে আরে এভাবে থরথর করে ঢুকে যাচ্ছো কেনো।(আমি)
.
--চুপ আগে বলো।।।ঔ মেয়ের সাথে এতো কিসের কথা বলতে ছিলে ঔখানে বসে বসে।আর আমাদের সামনে থেকে ওকে নিয়ে চলে আসলে কেনো?(জারা)
.
--সবারই অধিকার আছে গল্প করার।।।তুমি গল্প করেছো আমি কি তোমার কাছে একবারও জিজ্ঞাসা করেছি কেনো গল্প করলা ঔ ছেলের সাথে।(আমি)
.
--দুজনের মধ্যে পার্থক্য আছে।।।আমি ঔ ছেলের সাথে কথা বললেও তোমাকে ইগনোর করি নি।।।কিন্তু তুমি আমাকে ইগনোর করে চলে আসলা ঔখান থেকে।(জারা)
.
--দেখো আমি....(আমাকে আর কিছুই বলতে দিলো না জারা।।।আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো)
.
--কোনো কথা বলবা না।।।আমাকে প্লিজ মাফ করে দাও।।।আমি বুঝতে পারি নি তুমি কষ্ট পাবে।।।আমার কোনো দোষই ছিলো না।।।তোমার বোনই গল্প শুরু করেছিলো ছেলে দুইটার সাথে।আমার জাদু কাজ করছিলো না ওর উপর।।।ও নিজে থেকেই গল্প শুরু করেছিলো ছেলে দুইটার সাথে।।।আর ছেলে দুইটা ও সু্যোগ পেয়ে আমাদের হাসাতে শুরু করলো।।আমার কোনো ভুলই ছিলো না।(জারা)
.
--কান্না করছো কেনো?(আমি)
.
--প্লিজ মাফ করে দাও আমাকে।।।তুমি মাফ না করলে কিন্তু আমি কান্না করেই যাবো।(জারা)
.
--এভাবে কান্না কইরো না তো।আমার খারাপ লাগে তুমি কাদলে।(আমি)
.
--আগে বলো মাফ করেছো।(জারা)
.
--হ্যা।(আমি)
.
--তুমি ঔ মেয়ের সাথে আর কথা বলবা না তো।(জারা)
.
--ও তো শুধু বন্ধু।(আমি)
.
--না আমার ভালো লাগে না একদমই ঔ মেয়েকে।।।তোমার দিকে ডপডপ করে তাকিয়ে থাকে শুধু।(জারা)
.
--হাহাহা।তোমার ও জ্বলে তাহলে?(আমি)
.
--হ্যা।(জারা)
.
--তাহলে কালকে থেকে আমরা কলেজে যাবো না ঠিক আছে।(আমি)
.
--বাসায় কি বলবা?(জারা)
.
--তুমি মেনেজ করবা।।।হালকা জাদু টোনা করলেই হবে।(আমি)
.
--আচ্ছা।চলো না একটু ঘুরে আসি দুজনে।(জারা)
.
--কিন্তু হৃদি।(আমি)
.
--ও একটু অসুস্থ আছে।আপাতোতো তিন চারদিন ও কোথাও বের হবে না।(জারা)
.
--ওকে চলো।(আমি)
.....
।।।।
নিচে আসলাম আমি।।।জারাও নিচে আসলো।।।
.
--আন্টি হৃদি তো বের হতে পারবে না আমার সাথে।।।আমার একটু লাইব্রেরীতে যাওয়ার দরকার ছিলো আপনি কি যাবেন আমার সাথে?(জারা)
.
--না মা।।।আমার তো কাজ আছে অনেক।।।ঔ হৃদু বাবা তুই যা না ওর সাথে একটু।(আম্মু)
.
--কিন্তু।(আমি)
.
--কোনো কিন্তু নয়।যা।(আম্মু)
.
--ওকে আম্মু।(আমি)
।।।।
।।।।
.
--দারাও আমি হৃদির বোরকাটা পরে আসছি।(জারা)
.
--হুমমম যাও।।।(আমি)
।।।।
।।।।
জারা কে নিয়ে বের হলাম ঘুরতে।।।অনেকক্ষন ঘুরলাম।।।হাতে হাত রেখে ঘোরার মজাটাই আলাদা৷।।।সে যাইহোক রাতে বাসায় ফিরলাম।
।।।
।।।
দেখতে দেখতে তিনটা দিন কেটে গেলো।।।
.
--হৃদু আজকে আমরা তিনজন বের হবো বুচ্ছোস।(হৃদি)
.
--কোথায় যাবি।(আমি)
.
--আজকে আমরা একটু লেকের পাশে যাবো ঘুরতে।(হৃদি)
.
--আচ্ছা রেডি হ যা।(আমি)
.
--হচ্ছি তুই বসে বসে নে বড়া পিঠা খা।(হৃদি)
।।।।
।।।।
জারা আর হৃদিকে নিয়ে বিকালে বের হলাম।।।লেকের পাড় দিয়ে হাটতেছি।।।আজকে ভাবলাম হৃদিকে বলে দিবো জারার কথা।।।আমি আর লুকাতে পারছি না ওর কাছে।।।।যেই ভাবা ভাবলাম বলবো।
.
--হৃদয় আমার না আইসক্রিম খেতে মন চাচ্ছে একটু কিনে আনবে।(জারা)
.
--হৃদু আমারও না খেতে মন চাচ্ছে।দুটো নিয়ে আয় ভাই।(হৃদি)
.
--ওকে ঠিক আছে তোরা এখানে দ্বারা আমি নিয়ে আসছি।(আমি)
.
--তারাতারি আসিস ভাই।(হৃদি)
.
--হুমমম(আমি)
।।।।
।।।।
তিনটা আইসক্রিম কিনে ওদের কাছে আসলাম।।।কিন্তু কোথাও কাউকে খুজে পাচ্ছি না।।।ব্যাপার কি দুজন গেলো কোথায়।মনে হয় আশেপাশেই আছে।।।পুরো লেকের পাড়ে খুজে দেখলাম কিন্তু পেলাম না।।।ক্লান্ত হয়ে একটা বেঞ্চে বসে পরলাম।দেখি শান্তা।আমার পাশে এসে বসলো।
.
--কি খুজে পাচ্ছো না তোমার বোন আর জলপরীটাকে।(শান্তা)
.
--মানে তুমি এসব জানলে কোথা থেকে।।।আর কোথায় ওরা।(আমি)
.
--আমি কিভাবে জানলাম সেটা তো বড় কথা না।বড় কথা হলো ওরা এখন কোথায় আছে।(শান্তা হাসতে লাগলো)
।।।।।।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((((চলবে)))))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
।।।।।।