*জলপরীর প্রেমে*
পার্টঃ০৪
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)
।।।।।
।।।।।
।।।।।
গোসল শেষ করে বাসায় আসলাম দুজনে।।।হৃদিকে ব্যাপারটা বল্লাম না যে আমি পানিতে শ্বাস নিতে পেরেছি।এটাও হয়তো পরীটারই কোনো জাদুর জন্য হয়েছে।আজকে বাসায় চলে যাবো।।রেডি হয়ে বের হচ্ছি।।।সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিলাম।
.
--নানু ভাই।তুই খুব সাবধানে থাকবি।আর সব সময় হৃদির পাশেই থাকবি।ওর থেকে দূরে কোথাও যাবি না।(নানু)
.
--তোমরা এমন করতেছো।কি হয়েছে আমাকে একটু খুলে বলবা তো।(আমি)
.
--সময় হলে সব জানতে পারবি।।।আর এখানে আসার দরকার নাই।।।(নানু)
.
--কিন্তু কেনো।।।এখানে আসবো না কেনো।।।আমার তো এই জায়গা খুব ভালো লাগে।(আমি)
.
--যা বলছি সেটাই করবি।।।আর হৃদি তুই সব সময় হৃদু এর পাশে থাকবি।।।কখনো ওকে একা রাখবি না।(নানু)
.
--ঠিক আছে নানু।।।তুমি একটু ও চিন্তা কইরো না।(হৃদি)
।।।।।
।।।।।
বুঝলাম না সবাই আমার থেকে কিছু একটা লুকাচ্ছে।আমাকে নিয়ে ভয় পাচ্ছে।।।আমাকে বললে কি সমস্যা।বললে তো তাউ সেসব কাজ করতাম না যেসবে সমস্যা হবে।।।।।।।।
।
বাসায় যাওয়ার জন্য গাড়িটায় উঠলাম।বাবা গাড়ি চালাচ্ছে।আম্মু বাবার পাশে বসেছে।আমি আর হৃদি পিছনে বসেছি৷।গাড়িটা নদীর পাশে এসেই নষ্ট হয়ে গেলো।স্টার্ট নিচ্ছে না।।।আমি আর হৃদি বের হলাম বাইরে।।।আমি একটু নদীর পাড়ে এলাম মুখে পানি দিতে।
.
--এই হৃদু যাস না তো ঔদিকে।।।গাড়ি এখনি ঠিক হয়ে যাবে।(বাবা)
.
--বাবা আমি একটু মুখে পানি দিয়ে আসি।(আমি)
.
--এই হৃদি যা তো ওর সাথে মা।(আম্মু)
.
--হৃদু।।।ভাই আমার তোর কি হয় মাঝে মাঝে বল তো।(হৃদি)
.
--কি হবে।(আমি)
।।।।
।।।।
নদীর পাশে এসে দিলাম পানিতে হাত।মুখ ধুলাম।তারপর হাত ধোয়ার জন্য পানিতে হাত দিলাম।।মনে হলো কেউ আমার হাতটা ধরেছে।বুঝলাম ই না কি হচ্ছে।জোরে টানছি তাও হাত পানি থেকে বের হচ্ছে না।।।পানিতে মনে হয় কিছু একটা আমার হাত ধরে রেখেছে।
.
--কি হলো চল।(হৃদি)
.
--যাবো কিন্তু আমার হাত বের হচ্ছে না পানি থেকে।।।মনে হচ্ছে কেউ ধরে রেখেছে।(আমি)
.
--কৈ দেখি।(হৃদি আমার পাশে আসতেই আমার হাতটা ছেড়ে দিলো পানি)
.
--এখন ছেড়ে দিছে।(আমি)
.
--হয়ছে হয়ছে আর মজা করতে হবে না।।।।চল এখন।(হৃদি)
.
--হুমমম চল।(ওর কাছে এটা মজা লাগলো)
.
--ঔ তোরা গাড়িতে বস গাড়ি ঠিক হয়ে গেছে।(বাবা)
.
--হুমমম চলো।(আমি)
।।।।
।।।।।
।।।।।
চলতে লাগলাম আবার।।।কিন্তু আমার সাথে ঘঠে যাওয়া বিষয় গুলো খুব ভাবাচ্ছে আমাকে।।।কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।।।আমি কি এতো সুন্দর নাকি যে একটা আকাশ পরী আমার প্রেমে পরবে।আর শুনেছি আকাশ পরীদের জাদু পানিতে কাজ করে না।।।আর জলপরীর কাহিনী তো পুরো কাল্পনিক।।।তাহলে পানিতে আমার সাথে এসব কেনো হচ্ছে।আমি তো কিছুই বুঝতে পারচ্ছি না।
।।।
।।।
বাসায় পৌছে গেলাম।।।পৌছাতে পৌছাতে বিকাল হয়ে গেলো।।।এসেই কিছু খেয়ে দিলাম একটা বড় সড় ঘুম।।।উঠলাম একবারে রাত্রে।
.
--অলস একটা আর কত ঘুমাবি।।।তারাতারি উঠ।।।রাতের খাবার খাবি না।(হৃদি)
.
--রাতের খাবার????সকাল হয়ে গেছে না?(আমি)
.
--পাগলে বলে কি রাত ৯ টা বাজে।(হৃদি)
.
--কি এতোক্ষন ঘুমিয়েছি।।।তুই ডাক দিবি না আমাকে।(আমি)
.
--না তুই ঘুমাচ্ছিলি একটি ঘুমাতে দিলাম তোকে।(হৃদি)
.
--ভালো করছোস।(আমি)
.
--এখন যা ফ্রেস হয়ে আয়।আমরা ডিনার করবো।(হৃদি)
।।।।।
।।।।।
ওয়াসরুমে এসে হাত ধুচ্ছিলাম।।।আগে খেয়াল করি নাই।কিন্তু আমার হাতে একটা আংটি।।।খুবই সুন্দর একটা আংটি আমার হাতে।।।কিন্তু এটা আমার হাতে আসলো কিভাবে।।আংটির মাথায় একটা ছোট সুন্দর উজ্জল মুক্তা বসানো।।wait এই মুক্তা গুলোকে আমি দেখেছি।।হ্যা মনে পরেছে ১৮৯১ সালের পর থেকে এই মুক্তা গুলো সমুদ্র থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।।শুধু সমুদ্র না আমাদের মাটিতেও যতগুলা মুক্তা ছিলো সব হঠাৎ করেই ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছিলো।।।।সবাই ভাবে এটা হয়েছিলো কোনো কালো জাদুর প্রভাবে।।।।
।
হ্যা এটা সেই মুক্তা।।কিন্তু আমার আঙ্গুলে আসলো কি করে।।।।কিছুই তো বুঝলাম না।।।আংটিটা খোলার চেষ্টা করলাম।কিন্তু কিছুতেই খুলছে না।।।দুর কি বিপদে পরলাম।।।।।আচ্ছা থাকুক আংটিটা খুব সুন্দর লাগছে দেখতে।।।কিন্তু এটা কোনো মেয়ের হাতে থাকলে আরো সুন্দর লাগতো।
।।।।
।।।।
ফ্রেস হয়ে নিচে এসে ডিনার কম্পিলিট করলাম।।।তারপর আবার রুমে আসলাম।।।হৃদি ক্লান্ত ছিলো তাই ঘুমিয়ে পরেছে।কিন্তু আমি বারান্দায় গিয়ে দাড়িয়ে রয়েছি।।।অপেক্ষায় ছিলাম কালকের পরীটার।।।আজকে কোনো খবরই দেখলাম না।।।বিরক্ত হয়ে রুমে চলে যাচ্ছিলাম।।হঠাৎই আওয়াজ আসলো
.
--কি হলো রুমে চলে যাচ্ছো যে।(হঠাৎই আমার সামনে আলো দৃশ্যমান হতে লাগলো)
.
--জানতাম আসবেন আপনি।(আমি)
.
--আপনি করেই কি বলবা।(পরী)
.
--ওকে সরি তুমি করেই বলবো।(আমি)
.
--হুমমম।(পরী)
.
--এতোক্ষন লাগলো কেনো আসতে?(আমি)
.
--আমি তো এখানেই ছিলাম তোমার বিরক্ত ভরা মুখ দেখে খুব মজা পাচ্ছিলাম।(পরী)
.
--ওও।(আমি)
.
--হুমমম।।।অনেক মিস করেছি এই এক দিনে।(পরী)
.
--কালকে হঠাৎ করেই যে চলে গেলে।(আমি)
.
--আমার আম্মি আমাকে ডাকছিলেন।যার জন্য আমাকে ফিরে যেতে হয়েছে।(পরী)
.
--আচ্ছা আমি শুনেছি পরীদের মাঝে দুই ধরনের পরী থাকে।এক ভালো পরী আরেক খারাপ পরী।তুমি কোনটা?(আমি)
.
--আমি তো রাজকন্যা।।(পরী)
.
--সেটা কি জিজ্ঞাসা করেছি।তুমি ভালো কি খারাপ।(আমি)
.
--সেটা আমি নিজেও জানি না।(পরী)
.
--আমাকে যে ভালোবাসতে আসছো।।।পরীদের তো নিষিদ্ধ কোনো মানব সন্তানকে ভালোবাসা।।তার উপর তুমি রাজকন্যা তুমি আমাকে ভালোবাসলে শত শত জ্বীন আসবে আমাকে মারতে।(আমি)
.
--কখনোই না।আমি তোমাকে কিছুই হতে দিবো না।(পরী)
.
--দেখো আমি জ্বীন না হলেও,,,তোমাদের দেশে না গিয়েও।।।তোমাদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানি।।।তোমাকে ভালোবাসার দায় আমার হবে মৃত্যু আর আমাকে ভালোবাসার দায় তোমার পাখা খুলে নেওয়া হবে তোমার থেকে।যার জন্য তুমি ও মানুষের মতো হয়ে যাবে।সব মিলিয়ে শেষে আলাদায় থাকতে হবে আমাদের।(আমি)
.
--এসব কিছুই হবে না।।।আমি হবো রানী।।।তখন সবাই আমার কথা শুনবে।(পরী)
.
--তুমি রানী হলে কি আমার কাছে থাকতে পারবে।(আমি)
.
--তোমাকে আমি নিয়ে যাবো পরীর দেশে।(পরী)
.
--কখনোই না।।।আমি কখনোই যেতে পারবো না।(আমি)
.
--যেতে তোমাকে হবেই।নাহলে আমি তোমাকে নিয়ে যাবে জোর করে।
।।।।।।
।।।।।।
আমাকে ধরে উরাল দিলো পরীটা।।।আমি শত চেষ্টা করছি পরীটার কাছ থেকে ছোটার কিন্তু পারছি না।।।পরীদের ব্যাপারে তেমন কিছুই জানি না কিন্তু আজকে এতো জ্ঞান আসলো কোথা থেকে কিছুই বুঝলাম না।।।আমি চেষ্টা করছি পরীটার কাছ থেকে মুক্ত হওয়ার। কিন্তু আমাকে নিয়ে পরীটা উরাল দিলো।।।অনেক উপরেই উঠে গেছি।
.
--প্লিজ আমাকে ছেড়ে দাও।(আমি)
.
--আমাকে ভালো না বাসলে আমি জোর করে বাসাবো তোমাকে।(পরী)
.
--দেখো এটা না যে তোমাকে আমার ভালো লাগে না।।।তোমাকে সবারই ভালো লাগবে কারন তুমি পরী।।।।কিন্তু আমি আমার নিজের ভালোবাসাকেও পাশে চাই আর আমার পরিবারকেও।আর যেটা তুমি দিতে পারবে না।(আমি)
.
--পরিবারের কথা বাদ দাও।।।আমিই তোমার সব হবো।(পরী)
.
--তুমি নিশ্চয়ই খারাপ পরী নাহলে আমাকে এভাবে জোর করে নিয়ে যেতে না।(আমি)
.
--।।।।।।(কোনো কথা না বলেই উড়ছে শুধু)
।।।।।
।।।।।
হঠাৎ ই কোথা থেকে পানি এসে ভিজিয়ে দিলো আমাদের।।।পরীটার পাখা ভিজে গেলো।।।।কি করার দুজনেই পরতে লাগলাম।।।হাতের আংটি টা জ্বলতে লাগলো।তারপরই ছিটকে অনেক দূর চলে আসলাম।।শুধু এটুকুই মনে আছে আমি একটা বড় লেকের মধ্যে এসে পরলাম।তারপর বেহুস হয়ে গেলাম।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((((চলবে)))))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।