*জলপরীর প্রেমে*
পার্টঃ০৭
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)
।।।।
।।।।
।।।।
শুয়ে পড়লাম।।।খুব ক্লান্ত দিন কাটলো।।।খুব অদ্ভুদ দিন কাটলো আমার।।।না জানি বাবা আম্মু আর হৃদি কত চিন্তা করছে আমাকে পেয়ে।।।এরা আমাকে মনে হয় না যেতে দিবে সইচ্ছায়।।।কিন্তু আমাকে যে বের হতে হবে এখান থেকে।।।আমাকেও নাটক শুরু করতে হবে।।।পরের দিন খুব তারাতারিই ঘুম থেকে উঠলাম।।।পিছন থেকে আমার ঘাড়ে কে যেনো হাত দিলো।।।ভাবলাম হয়তো জারা।তাই খুশি হয়ে পিছনে তাকালাম।কিন্তু পিছনল জারা না।।।পিছনে সেনাপতি সাহেব।
.
--হুজুর আপনার প্রশিক্ষন এর সময় হয়ে গেছে।।।।আপনি চলুন কিছু নাস্তা করে শুরু করা যাক আপনার প্রশিক্ষন।(সেনাপতি)
.
--জ্বী চলুন।(আমি)
.
--হুম।।।(সেনাপতির সাথে যেতে লাগলাম।।।আমার হাত ধরে সেনাপতি নিয়ে যেতে লাগলেন।।।কালকের খাবার আমার রুমেই খেয়েছি।কিন্তু আজকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে।)
।।।
।।।
সেনাপতি আমাকে নিয়ে বড় সড় খাবারের টেবিলে চলে আসলেন।।।এক পাশে রানী বসে ছিলেন।আর আমাকে সেনাপতি অন্যপাশে বসতে বললেন।।।সব খাবার দেওয়া আছে।।।পানির ভিতরে কিভাবে খাবার খাই।সব খাবার গুলো টেবিলের উপরে উড়তে ছিলো।
.
--জ্বী শুরু করুন হুজুর।(রানী)
.
--এভাবে খাওয়াতো একটু অদ্ভুদ লাগছে।(আমি)
.
--আপনার কোনো সমস্যা নাই।আপনি আমাদের মতোই খেতে পারবেন।(সেনাপতি)
.
--জ্বী রানী আম্মা আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।(আমি সাহস করে বল্লাম)
.
--হুমমম বলুন হুজুর।(রানী)
.
--প্রথমত আমি এখনো রাজা হয়নি আপনাদের।।। সো আমাকে হুজুর বলা বাদ দিন।।।আমার নাম আছে আর সেটা হুজুর।।।আর পরের টা হলো আমি এসব বিষয়ের জন্য প্রস্তুত না এখনো।(আমি)
.
--প্রস্তুত কেউ থাকে না।।।সময় এবং পরিস্থিতি সবাইকে প্রস্তুত বানিয়ে দেই।(রানী)
.
--কিন্তু আমার সময় এখনো আসে নি।।।আমি মানা করছি না,যে শর্ত আমার বাবা আর আম্মু রেগে আমাদের জীবন্ত রেগেছে আমি সেই শর্ত মানতে রাজি কিন্তু আমার ভয় করছে।।।আমি শেষ বারের মতো কিছু সময় আমার পরিবারের সাথে কাটাতে চাই।(আমি)
.
--এটা তো সম্ভব নয়।(রানী)
.
--চাইলেই সম্ভব।।।সবাই শর্ত রাখে।।।আমি ও একটা শর্ত রাখছি।।।আমি কিছু সময় চাই।।।আমি আমার পরিবারের সাথে কাটিয়ে তারপর আসবো।(আমি)
.
--আপনার রাজা হওয়ার পর আপনি যে কোনো সময়ই যেতে পারবেন।।এখন আপনাকে এভাবে পাঠানো ঠিক হবে না।(রানী)
.
--তাহলে আপনাদের সেরা কিছু সেনা আমার সাথে পাঠান আমার সুরক্ষার জন্য।আমি শর্ত রেখে দিয়েছি।।।আমাকে কিছু সময় দিতে হবে।(আমি)
.
--ঠিক আছে।।।১৫ দিন পর আপনার অভিষেক হওয়ার কথা ছিলো এইটা ২ মাস পর হবে।।।আপনাকে এমনিতেই সবার আরালে রাখতে চেয়েছিলাম।আপনি আপনার দুনিয়ায়ই গোপন থাকবেন।(রানী)
.
--তাহলে আমার সাথে কয়েকজন সেনা পাঠিয়ে দিন আমার সুরক্ষার জন্য।(আমি)
.
--কোনো সেনার প্রয়োজন হবে না।।।রিয়ানী যাও রাজকুমারীকে ডেকে নিয়ে আসো।(রানী)
.
--রাজকুমারীকে আমার সাথে পাঠাবেন?(আমি)
.
--হ্যা রাজকুমারী অনেক জেদ করতো তাকে ভুলোক দেখিয়ে নিয়ে আসতে কিন্তু আমরা তাকে নিয়ে যেতে পারি নি।।।আপনার সমস্ত সুরক্ষা রাজকুমারী একাই করতে পারবে।(রানী)
.
--ওকে ঠিক আছে সমস্যা নাই।।ধন্যবাদ আমাকে সময় দেওয়ার জন্য।(আমি)
.
--একজন রানী হয়ে আমি সময় দিলাম না।।।একজন মা হয়ে ছেলের কষ্টটা বুঝে সময়টুকু দিলাম।।।।হয়তো আপনি এর পরে কোনো বিষয়ে আল্লাদ করবেন না।।।(রানী)
.
--হুমমম ধন্যবাদ রানী আম্মা।(আমি)
.
--সেনাপতি আপনি এখনি রাজকুমারী জিয়াইনিয়া আর রাজা সাহেবের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিন।(রানী)
.
--জ্বী রানী আম্মা।(সেনাপতি)
.
--রানী আম্মা আমাকে ডেকেছেন।(জারা)
.
--হুমমম।।।রেডি হয়ে নাও তুমি তোমার হবু জামাই এর বাসায় যাবে।(রানী)
.
--কিন্তু আম্মা।(জারা)
.
--তোমার এতো দিনের ইচ্ছা পূরন হচ্ছে।পুরো ২ মাস থাকবে।।।সব সময় ওনার সাথেই থাকবে।।।ওনার কোনো কিছু জেনো না হয়।(রানী)
.
--রানী আম্মা আপনি চিন্তা করবেন না।।।আমি সব মেনেজ করে নিবো।(জারা)
.
--তাহলে এখনই প্রস্থান করো।।।সেনাপতি ওনাদের দিয়ে আসুন।(রানী)
.
--জ্বী রানী আম্মা।(সেনাপতি)
।।।।
।।।।
খাওয়া শেষ করলাম।।।জারা আমার হাত ধরে আমাকে বাইরে নিয়ে আসলো।
.
--আমার বিশ্বাস হচ্ছে না আম্মা তোমাকে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।(জারা)
.
--দিবে না কেনো।।।আমি যেভাবে বল্লাম রাজি না হয়ে কি পারে।(আমি)
.
--হুমমম।তাহলে চলো দুজনে যায়।(জারা)
.
--কিন্তু আমার সুরক্ষার জন্য তোমাকে কেনো পাঠালো?(আমি)
.
--ও হ্যালো।আমাকে কি কম ভেবেছো।।বুঝেছো আমি এই জুলপুরীর শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা বুঝছো।।।ও সরি জলপরীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।(জারা)
.
--একটা মেয়ে কি আমার সুরক্ষা করতে পারবে।এটা আমার মনে হয় না।(আমি)
.
--কেনো পারবো না।।।তোমাকে দেখিয়ে দিবো দেইখো।(জারা)
.
--তুমি তো অদৃশ্য হতে পারো তাই না।।।।তাহলে আমার সাথে সব সময় অদৃশ্য হয়ে থাকবা।(আমি)
.
--মানে পাগল হয়ছো।।।আমি পারবো না।।।আমি তোমার হবু বউ।আমাকে পরিচয় করিয়ে দিবা তোমার বউ হিসাবে।(জারা)
.
--আমি পারবো না।(আমি)
.
--পারবা না মানে।।আমার সাথে তোমার বিয়ে হবে।।।আর তুমি আমাকে বউ হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিতে পারবা না।(জারা)
.
--পারবো কিন্তু হঠাৎ কি বলবো বাসায়।(আমি)
.
--তুমি কোনো চিন্তা কইরো না।।।সব ব্যবস্থা আমি করে নিবো।(জারা)
.
--কি করবা।(আমি)
.
--সেটা জানতে হবে না।।।চলো তো এখন।(জারা)
.
--কিভাবে যাবো।।।সাতার কেটে?(আমি)
.
--আরে বুদ্ধু।।এতোদূরে কোন পাগলে সাতার কেটে যায়।(জারা)
.
--তাহলে।(আমি)
.
--আমাদের জাহাজে যাবো।(জারা)
.
--ওওও।।।(আমি)
.
--তাহলে চলো।।।(আমি)
.
--হুজুর আপনার কোনো সমস্যা হলে এই ফোনটা রাখুন।এটা আমাদের জলের দুনিয়ার ফোন।এইটাই আমার নাম্বার দেওয়া আছে।যখন কোনো সমস্যা হয় তখন আমাকে ফোন দিবেন।(সেনাপতি)
.
--হুমমম ঠিক আছে।ভালো থাকবেন।(আমি)
.
--হুমমম আপনিও সাবধান থাকবেন।(সেনাপতি)
।।।।
।।।।
আমরা ছোট জাহাজটাই উঠলাম।।।সেনাপতি আমাদের নিয়ে আসলো একটা গুহা দিয়ে।।।বুঝলাম না কোথায় এলাম।।।কিন্তু যখন পানির উপরে উঠলাম তখন বুঝতে পারলাম আমি কোথায় আছি।।।আমাদের বাসার পিছনের জঙ্গলের ছোট নদীটাই আমরা।।।কিন্তু কিভাবে আসলাম বুঝলামই না।।।সাগর থেকে সোজা ছোটো পুকুরে।।।তাও আমার বাসার পিছনে।।রাত হয়ে গেছে।।।কি করে আসলাম মাথায় বুঝলাম না।।থাক এসেছি তো।।।সেনাপতিকে বিদায় দিয়ে দিলাম।
.
--তো চলে এসেছি তোমাদের দুনিয়ায়।(জারা)
.
--হ্যা।তো তুমি কি এভাবে আমার সাথে যাবে।(আমি)
.
--না তোমার চিন্তা করতে হবে।।।আমি তোমাকে ঠিকই সারপ্রাইজ দিবো দেইখো।(জারা)
.
--তাহলে তোমাকে একা কি করে রেখে যায়।(আমি)
.
--আমাকে একা রাখছো কোথায়।।।আমি তোমার সাথেই থাকবো সব সময়।তুমি বাসায় যাও।।।রাত হয়ে যাচ্ছে।(জারা)
।।।।
।।।।
জারা আমার সাথে গল্প করতে করতে আসতে লাগলো।আমি বাসায় এসে কলিং বেল চাপ দিলাম।।।হৃদি দরজা খুলে দিলো।।।আমাকে দেখে জরিয়ে ধরলো হৃদি
.
--ভাই আমাদের রেখে কোথায় চলে গিয়েছিলি তুই।আম্মু বাবা দেখো হৃদয় এসেছে।(হৃদি)
.
--কোথায় কোথায়।বাবা তুই আসছিস।।।আমরা তো ভয় পেয়েই গিয়েছিলাম।(আম্মা)
.
--আরে বইলো না।।।আমি রাতে ঘুমাইছি আর এখন দেখলাম আমি জঙ্গলে শুয়ে আছি।।।তারপর উঠে বাসায় চলে আসলাম।কি হয়েছিলো কিছুই বুঝতেছি না।(আমি মন খারাপ করে বল্লাম)
.
--কিছুই হয় নাই বাবা।।।তুই ঘরে আয়।।।হৃদি তুই হৃদয়কে নিয়ে রুমে চলে যা।।।সব জানালা দরজা বন্ধ করে দিস।(বাবা)
.
--হুমমম বাবা যাচ্ছি।(হৃদি)
।।।
।।।
আমি পিছনে তাকালাম জারাকে দেখতে পেলাম না।সে অদৃশ্য হয়ে গেছে মনে হয়।।।হৃদি আমাকে নিয়ে রুমে আসলো।।।এখন অনেকটা ভালো লাগছে।নিজের রুমে থাকার মজাটাই অন্যরকম সেটা এখন বুঝতে পারছি।।।আমাকে নতুন প্লান বানাতে হবে কি করে আমি এখানেই সারাজীবন থাকতে পারি।।।এতে অন্য সবার যা হোক কিন্তু আমি আমার পরিবারের সাথেই থাকতে চাই।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((((চলবে)))))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।