*জলপরীর প্রেমে*
পার্টঃ২৪
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)
।।।।।
।।।।।
।।।।।
চলে আসলাম সেই দানব টার ঘরে যেখান থেকে আমরা বের হয়েছিলাম।।।যখন আমরা ঔ দানবের ঘরে ঢুকেছিলাম তখন আমি এই দরজার পাশ থেকে অনেক শব্দ শুনেছিলাম।।।যেটার দরুন বুঝে গেলাম এখানের শব্দ ঔখানে যেতে পারে।।।কিন্তু ঔখানের শব্দ এখানে আসে না।।।ট্রিশুলটা পাওয়ার পর থেকে আমার মাথা আরো দ্রুত কাজ করছে সেটা আমি বুঝতে পারছি।।।
।
আমি ভিতরে ঢুকলাম।।।দানবটা আমাকে কুর্নিস করলো।
.
--রাজা হৃদয় টিটান এর জয় হোক।(দানব)
.
--আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আমি আর এখন রাজা নেই।।।আমার রাজ্য এবং পাতালপুরীর রাজ্যকে কব্জা করে নেওয়া হয়েছে।(আমি)
.
--তো আমার থেকে আপনি কি সাহায্য আশা করছেন?(দানব)
.
--আমি শুধু আপনার থেকে না।।।আমি এই পুরো দানব রাজ্য থেকে সাহায্য আশা করছি।(আমি)
.
--আপনি যেহেতু আর রাজা নেই এখন।।।আমাদের দানব রাজ্যের রাজা কখনো আপনাকে সাহায্য করবে বলে মনে হয় না।(দানব)
.
--যদি রাজাই না থাকে।(আমি)
.
--আপনি কি রাজাকে মুষ্টিযুদ্ধে আমন্ত্রণ করতে চান।(দানব)
.
--হ্যা।(আমি)
.
--আপনি মানুষ আর সে আমাদের শক্তিশালী দানব।।।তার সাথে পারবেন বলে তো মনে হয় না।(দানব)
.
--ভুলে যাবেন না আমার কাছে রয়েছে মহান ট্রিশুলটা।(আমি)
.
--এটা কিভাবে সম্ভব তাহলে কি আপনিই রাজা হারকিউমাসের সৌজন্য।(দানব)
.
--হ্যা।(আমি)
।।।।
।।।।
আমার সামনে আবার কুর্নিস করলো দানবটা।
.
--আর যায় হোক আপনি আমার রাজা সেটা আমি মেনে নিলাম।(দানব)
.
--আপনাকে ধন্যবাদ।।।কিন্তু আমাকে নিয়ে আপনাদের রাজ প্রাসাদে নিয়ে যান।(আমি)
.
--ঠিক আছে মহারাজ।।।আপনি আমার পিঠে চড়ে বসুন আমি আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি।(দানব)
।।।
।।।
আমাকে দানবটা তার হাতে নিয়ে তার পিঠে বসিয়ে দিলো।।।কম হলেও আমার থেকে ১০ গুন বড় হবে দানবটা।।।এমনি সময় হলে এদের সামনে যেতেই আমি ভয়ে প্যান্ট ভিজিয়ে দিতাম।।।কিন্তু না তেমন কিছুই হলো না।।।কারন আমি আগের থেকে শক্তিশালী।।।আগের থেকে অনেকটা সাহসী আমি এখন।
।
আমাকে পিঠে নিয়ে রাজ প্রাসাদের সামনে চলে আসলো দানবটি।।।আর নিলা জারাকে নিয়ে উড়ে এসেছে।।।অবশ্য অনেক সুন্দর একটা জায়গা উপভোগ করেছি।।।দানবরাও আমাদের মতোই চাষ করে থাকে।।।তাদের সব জিনিসই আমাদের থেকে ১০ গুন বড় হবে হয়তো।।।গাছ দেখলাম যেটাই উঠতে হয়তো আমাদের সারাজীবন লেগে যেতে পারে।।।দানবটাকে জিজ্ঞাসা করাতে তিনি বললেন এটা তাদের এখানের সবচেয়ে বড় বটগাছ।।।যেটার কোনো শেষ আজ পর্যন্ত কেউ করতে পারে নি।।।তাদের এক একটা ফল দেখে তো আমার মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো।।পরে না হয় আরো বর্ননা দেওয়া যাবে।।।আমরা চারজন রাজ প্রাসাদের বাইরে দারালাম।।।সব বিশাল বিশাল দানবরা আমাদের ঘিরে ধরলো চারপাশ থেকে।।।
।
হয়তো আমাদের উপর আক্রমণ করার চিন্তা করছে।।।দেখলাম তাদের মধ্যে একজন রাজকীয় পোশাকে আসছিলো।দেখেই বোঝা যাচ্ছে উনিই রাজা।।।আমি মাথা নিচু করলাম না।।।কিন্তু সবাই মাথা নিচু করলো।।।
.
--তোমার সাহস কতো বড়ো রাজার সামনে মাথা উচু করে থাকো।(রাজার সেনাপতি)
.
--আমি একজন রাজা।।।রাজা হয়ে মাথা নিচু করা আমার পেশা না।(আমি)
.
--উহু।।।রাজা হয়তো ছিলেন।।।কিন্তু এখন আপনি আর রাজা নন।(দানব রাজা)
.
--হুমমম তবে খুব শীঘ্রই আবার রাজা হয়ে যাবো।(আমি)
.
--সেটা কিভাবে?(রাজা)
.
--সেটার জন্য আমার আপনার সাহায্য দরকার।।।আমার আপনার সেনা দরকার।(আমি)
.
--হাহাহা।।।(রাজা আমার কথা শুনে হাসতে লাগলো)
.
--আমার সেনা।।।।কোনো রাজাও যদি এই কথা বলতো আমি তাও তার সাহায্যের জন্য আমার সেনা বরাদ্দ করতাম না।।।আর কোথাকার মানব সন্তান এসে আমাকে বলতেছে তার নাকি আমার সেনা লাগবে।(রাজা)
.
--ওকে যদি এটা সহজ ভাবে না হয়।।।আমি না হয় একটু কঠিন পথ নিলাম।।।চলে আসুন আমার সাথে মুষ্টিযুদ্ধে।।।আমি আপনার সিংহাসনকে চ্যালেন্জ করলাম।।।যে জিতবে এই দানব রাজ্য তার।(আমি)
.
--আপনার সাহস হয় কি করে।।।আমার রাজ্যে এসে আমার সিংহাসনের উপর নজর দিতে।।।(রাজা)
.
--নজর হয়তো পরেও পরে যেতো।।।কিন্তু তখন আপনাকে মিত্র হিসাবে রাখতাম।।।কিন্তু আপনি যখন আমার প্রস্তাবে রাজি নন।তখন আমার আর কোনো পথ নেই।(আমি)
.
--ঠিক আছে আপনার যখন আমার হাতে মরতে ইচ্ছা হয়েছে তখন আর কিছুই বলবো না।।।চলে আসুন আপনার কবর এখানেই খোদা হবে।(রাজা)
.
--ঠিক আছে চলে আসুন।(আমি)
।।।।
।।।।
আমার হাতে ট্রিশুলটা দেখে হয়তো ভাবছে এটা সাধারন কোনো ট্রিশুল।।।আমিও তাকে এটার ব্যবহার দেখাতে চাই না।।।।আমি তাকে এমনিতেই পরাস্ত করতে চাই।।।আমি পানির সাহায্য নিলাম।।।রাজ প্রাসাদের চারপাশ দিয়েই বিশাল নদী।।।অবশ্য এটা আমাদের নদীর থেকে ১০ গুন বড়।।।আমি সেখান থেকে পানির ব্যবহার করবো।।।কারন গায়ের জোরে আমি দানবের সাথে পেরে উঠবো কিন্তু সেটার জন্য আমাকে ট্রিশুলের ব্যবহার করতে হবে।।।
।
আমি পানি উরিয়ে নিয়ে এসে সেটা দিয়ে রাজার উপরে আক্রমন চালাতে লাগলাম।।।পানি এমন একটা জিনিস যেটা জীবন বাচাতেও পারে।।।আবার জীবন নিতেও পারে যেটা আমার থেকে ১০ গুন বড় এই রাজার মৃত্যু দেখলেই বোঝা যায়।।।তাকে হারাতে আমার বেশী সময় লাগলো না।।।বিশাল পানির এক কণা উঠিয়ে সেটা দিয়ে পুরো ঢেকে দিলাম দানবটাকে।।।তারপর দিলাম সেটায় চাপ।।।দম বন্ধ হয়ে রাজা মারা গেলেন।।।।
।
আমি তাকে মারতে চাইনি।।।কিন্তু তাছাড়া কোনো উপায় নেই।।।এখানে যদি তার মেয়েকে বিয়ে করে তার রাজ্য পাবার আশা করতাম তাহলে সেটা তো অসম্ভব।।।একটা দানবীকে তো আর বিয়ে করা যায় না।।।তবে রাজাকে হারানোর সাথে সাথেই তাদের সেনা অবাক তো হলোই।।।সাথে সাথে আমাদের উপরে আক্রমনের জন্য এগিয়ে আসছিলেন।।।তারা হয়তো আমাকে রাজা হিসাবে মেনে নিবেন না।।।সেনাপতি তো বলেই দিলেন যে আমাকে মারতে পারবে সেই রাজা হবেন এই দানব রাজ্যের।
।
আমি আর কি করবো।।।ট্রিশুলটা ধরলাম শক্ত করে।।যে তালার দানবটা আমাদের সাহায্য করেছিলেন তাকে,নিলা আর জারাকে আমার কাছে চলে আসতে বললাম।।।আমি জোরে করে আঘাত করলাম ট্রিশুলটাকে মাটিতে।।।সাথে সাথেই সব কিছু কেপে গরিয়ে পরতে শুরু করলো।।।
।
পুরো রাজ প্রাসাদটা ধুলোর সাথে মিশে গেলো।।।দেখে বলা যাবে এখানে বড় ঘূর্নিঝড় বা সুনামী হয়েছে।।।সব কিছু আমরা যে জায়গায় দারিয়ে ছিলাম শুধু সেটুকু বাদে আশে পাশের সবই অনেকটা মাটির নিচে ডেবে গেছে।।।দানবগুলো ভয় পেয়ো গেলো।।।
.
--আমি হৃদয় টিটান।।।এখন থেকে আমি এই দানবরাজ্যের রাজা।।।।কেউ যদি আমার উপরে কোনো কথা বলে তাহলে তার গর্দান যাবে।(আমি)
.
--.....(সবাই ভয়ে আমার কথা শুনলো)
.
--সেনাপতি।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ ।(সেনাপতি ভয়ে ভয়ে বললো)
.
--আমার রাজ প্রাসাদ নতুন করে নির্মান করুন।আমি নতুন করে রাজ দরবারে বসতে চাই।(আমি)
.
--ঠিক আছে মহারাজ।(সেনাপতি)
.
--আমি দুইদিনের মাঝেই আমার রাজ প্রাসাদ দেখতে চাই।আপনি কি বুঝেছেন।।।নাহলে ব্যাপারটা কতটা খারাপ হতে পারে একবার আন্দাজ করুন।।।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ।(সেনাপতি)
.
--আর হ্যা দানব রাজ্যের রাজা পরিবর্তন হয়েছে এই খবরটা কোনোমতে জেনো এই দানব রাজ্য থেকে না ছড়াই।যদি ভুল করেও কারো কানে যায় তাহলে...(আমি)
.
--জ্বী না মহারাজ।।।কেউ জানতেই পারবে না।।।আপনিই আমাদের রাজা সেটা আমরা মেনে নিয়েছি।।।আপনি আপাতোতো আমাদের রাজ্যটা ঘুরে দেখুন।।।আর পূর্বপাশে আমাদের রাজার বিলাশভবন রয়েছে আপনি সেখানে গিয়ে দুইদিন অতিবাহিত করুন।।।দুইদিন পরই আপনার রাজপ্রাসাদ হয়ে যাবে।(সেনাপতি)
.
--জনইক দে।।(আমি)
.
--জ্বী হুজুর।।।(দানবটা)
.
--আমাদের কে তাহলে বিলাশভবনে দিয়ে আসুন।(আমি)
.
--হুমমম চলুন মহারাজ।(জনইক)
।।।।
।।।।
তালার মাস্টার আমাদের আবার তার পিঠে নিয়ে গেলো।।।সাথে নিলা আর জারা উড়তে উড়তে আসলো।।।নিলার ডানার জন্য খুব উপকৃতই হলাম।।।।আবারও উপভোগ করতে লাগলাম দানবের রাজ্য।।।এখন তো আর দানবের রাজ্য বলা যাবে না।।।এখন এটা আমার রাজ্যই।।।অবশেষে একটু বিশ্রাম নেওয়ার সময় পেলাম।।।।রাজার বিলাশভবন রাজার মতোই।।।কিন্তু কোনো কিছু আমার জন্য সুইটেবেল না।।।সব কিছুই দশগুন বড়।।।।আমাদেরকে প্রথমেই গোসল করতে দেওয়া হলো।।।আমি গোসল করে নিলাম প্রথমেই।।।তারপর নিলা আর জারাও গোসল করলো।।।অনেক পরিশ্রান্ত ছিলাম আমি তাই ভাবলাম কিছু খেয়ে নেওয়া যাক।।।আমাদের সেবাই নিয়োজিত অনেক গুলো দানবী।।।।সব কয়টা দানবদের ভাষায় সবচেয়ে সুন্দরী নারী।।।কিন্তু মানুষের ভাষায় ভয়ের বস্তু।।।কিন্তু আমার ভাষায় এরা সবাই আমার প্রজা।।।।খাবার টেবিলে আসলাম চেয়ারে বসার কোনো উপায় না দেখে টেবিলেই বসলাম।।।উঠতে সাহায্য করলো দানবীটা।।।
.
--মহারাজ কি খাবেন আপনি?আমি ছাদেহা আপনার সেবাই নিয়োজিত।(একজন দানবী)
.
--আমাদের দেহের সাপেক্ষে কিছু খেতে দিলে ভালো হতো।(আমি)
.
--মহারাজ তেমন কোনো বাসন আমাদের কাছে নেই।।।আপাতোতো আপনাদের আমাদের বড় বাসনেই খেতে হবে।(ছাদেহা)
.
--ঠিক আছে সমস্যা নাই।।।খাবার পরিবেশন করুন।(আমি)
।।।।
।।।।
নিলা আর জারাও রেডি হয়ে আমার পাশে এসেই বসলো।আর সব দানবী দেখলাম খাবার রেখে পাশে দারিয়ে গেলো।।।আর ছাদেহা সব খাবার গুলি পরিবেশন মানে ঢাকনা গুলো খুলে দিতে লাগলো।।।।আমি তো খাবার দেখে অবাক।।।আমাদের থেকে তো এক একটা ১০ গুন বড় হবে প্লেট।।।মনে হচ্ছে সাতার কাটা যাবে প্রত্যেকটা প্লেটে।।।।খাবার সবটাই অন্যরকম।।।এক একটা আস্ত মুরগী কাবাব করা।।।আর মাংস রান্না হয়েছে যেখানের এক একটা পিছই একটা মুরগীর সমান হবে।।।আর একটা মুরগী পুরো দুইটা খাসির সমান।।।আর ফলের কথা তো বল্লামই না।।।আঙুর গুলো তো ফুটবল।।।আম গুলোর আকৃতি কার সাথে তুলনা করবো সেটাই বুঝতে পারছি না।।।তবে দেখে অবাকই হলাম।।।আরো অনেক অচেনা ফল দেখলাম।।।আর খাবারের তো নামই জানি না কিভাবে সেগুলোর ব্যাপারে বলবো।।।এতো খাবার আর সাইজ দেখে তো খাওয়ার ইচ্ছা এমনিতেই চলে গেছে।
।
নিলা আর জারা একে অপরের দিকে শুধু বার বার তাকাচ্ছে।।।আমি ওদের দিকে তাকানোর সাথে সাথে ওরা হালকা মুচকি হেসে দিলো।।।কি করার ক্ষিদে তো পেয়েছেই।।।তাই শুরু তো করতেই হবে।।।কোনো কথা না বলেই আমি মুরগীর কাবাব টা খেতে শুরু করলাম।।।এখানে সবাই হয়তো প্রোটিন জাতীয় খাবারই খায় তাই তাদের শরীরে এতো জোর এতো শক্তি থাকে।।।অবশ্য সাইজ অনুযায়ী তো জোর হবেই।।।খাওয়া সেরে নিয়ে রেস্ট নেওয়ার পালা হয়ে গেলো।।
।
রুমে এসে তো আরেক চমকে পরলাম।।।বিছানাতো সেই বড়।।।।এতো বড় বিছানা আর অনেক উচু।।সব কিছু দেখে নিজেকে এখন পিপড়া পিপড়া মনে হচ্ছে।।।না সেনাপতিকে কালকেই বলতে হবে আমার সুবিধার ন্যায় সিংহাসন,শয়নকক্ষ,খাবার কক্ষ বানাতে।।।তা নাহলে আমি যখন এই রাজ্যে থাকবো তখন তো আমার মোটেও সুবিধা হবে না দেখতেছি।।।।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((((চলবে)))))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।