আসসালামু আলাইকুম। গল্প প্রতি শনিবার, সোমবার এবং বুধবার রাত ১০টা থেকে ১১ টার মধ্যে ওয়েবসাইটে পোস্ট হবে।

New SITE!

জলপরীর প্রেমে পর্বঃ ০১

Bangla Dub Novels

 *জলপরীর প্রেমে*

লেখক:হৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)

।।।।।

।।।।।

বসে আছি হাতে পেন্সিল রাবার আর ড্রয়িং খাতা নিয়ে।চারিপাশে থমথমে পরিবেশ।শ্রাবণ মাস এটা।গ্রামে এমনি তেই বৃষ্টিতে নদী নালা সবই ভরে যায়।এখন ও বিপরীত কিছু হয় নাই।সবই ভরে গেছে পানিতে।একটু আগেই বৃষ্টি থেমেছে।আমার ও ছোটো বেলার অব্যাস।চলে এলাম ছবি আকতে।কাল শহর থেকে গ্রামে আসতে হয়ছে।নানুর নাকি শরীর খারাপ।তাই দেখতে আসতে হলো।আমি আবার ছোটোকাল থেকেই গল্প লেখা আর ছবি আকার চরম ভক্ত।মানে যেখানেই যায় না কেনো আমার সাথে আমার ডাইরি আর ড্রয়িং জিনিসগুলো সঙ্গী হবেনই।।প্রতিবারই নানা বাসায় আসলে আমি এখানে বসেই ড্রয়িং করি।অনেক বড় নদী সামনে।তার পাশেই বিশাল একটা আম গাছ।আমি যখনই আসি এই আম গাছের নিচে মাচাল বানানো আছে সেখানেই বসি।আজ ও বসে বসে ড্রয়িং করছি।আমি এখানে বসি বলেববড় মামাই এই মাচাল টা বানিয়েছেন।আমি অনেক কিছুরি ড্রয়িং করি।কিন্তু ছোটো থেকেই যখন এই নানা বাসায় আসি।আর এই নদীর কাছে আসি।তখনই শুধু একটি ছবিই বার বার বানাই।বিগত ১৪ বছর যাবৎ আমি শুধু এখানে এসে একটি ছবিই একে যাচ্ছি।আমার আবার প্রতিবারেরই অভ্যাস কেনো জানি এখানে বসে একই ছবি দুইটা আকি।আজ ও তাই হলো। আগের বার এসে যে ছবিটা একেছিলাম সেটার চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে।সবই ঠিক ঠাক।কিন্তু আমার মাথায় এই জলপরীটার ছবি আসে না।কত বার যে চেস্টা করেছি এই জলপরী টার মুখ দিতে।কিন্তু না কোনো না কোনো কারনে ভুলে যায়।এবার ও চেষ্টা করতে লাগলাম।ছবির নদীর মাঝের জলপরীটার মুখ দিতে।কিন্তু না কেনো জানি এভাবেই খুব ভালো লাগে।বিষয়টা কাল্পনিক হলে ও আমার মনে অষ্তিরতা কাজ করছে।আমাকে এই জলপরীটার চেহারা দেখতেই হবে।কিন্তু আমি ও না।কেমন।এখানে আসলেই শুধু নিজেই নিজের সাথে বক বক করতে থাকি।না অনেক দেরী হয়ে গেছে।বাসায় যেতে হবে।প্রতিবারের মতোই একটা ছবি ফেলে দিলাম।সেই ছোট বেলা থেকেই আমি ভাবতাম হয়তো ফেলে রাখলে জলপরী এসে দেখে যাবে।কিন্তু কিছুই হয় না।উল্টা অভ্যাস হয়ে গেছে।তাই কিছুই করার নাই।করতেই হয়।নানু খুব অসুস্থ।জানি না কি হয়।আমার ও ছুটি ফুরিয়ে আসছে।কলেজে ভর্তি হতে হবে।বাসায় ফিরতে ফিরতে পরিচয় দিয়ে দেই।।আমি হৃদয়।এবার এস এস সি দিয়েছিলাম।কিছুদিন পর কলেজে ভর্তি হবো।বাবা,মা আর আমার দুষ্ট মিষ্টি যমজ বোন হৃদিকা কে নিয়েই আমাদের সংসার।আমি হৃদিকার ৫ মিনিট পরে হয়েছিলাম এতেই ও আমার কাছে বড় আপু দাবী করে।কিন্তু ওর দাবী টা এখনো মেনে নিতে পারি নাই আমি।আমার আর হৃদিকার চেহারা একদম একরকম।যদি আমি ওর বোন বা ও আমার ভাই হতো তাহলে আমাদের চেনাই যেতো না কোনটা কে।আমাদের পরিবারে আরো রহস্য আছে সেগুলো পরে জানতে পারবেন।

পরিচয় দিতে দিতে বাসায় পৌছে গেলাম।

.

:-কিরে কোথায় গিয়েছিলি রে।(হৃদি)

.

:-কেনো তোকে বলতে যাবো কেনো।(আমি)

.

:-হয়ছে বলতে হবে না।বুঝছি কোথায় গিয়েছিলি।তোর এখানে আসলে মাথায় ভুত চাপে কেন রে।ঔ এক ছবি আর কতবার আকবি।

.

:-আমার......

আমাকে থামিয়ে দিয়ে হৃদি বলা শুরু করলো-

.

:-থাম এটাই তো বলবি।তোর কোনো দোষ নাই।কেমনে কি হয় নিজে ও জানোস না।

.

:-হুমমমম।

.

:-চুপ বেয়াদপ মিথ্যা বলোস বড় বোনের কাছে।

.

:-কে বড় বোন।

.

:-কেনো আমি তোর বড় বোন।

.

:-যা ফোট।আমি বড় ভাই।তুই আমার থেকে ছোটো।

।।।।।

যা লেগে গেলো আবার।সারাদিন ঝগড়া করি আমরা দুই ভাইবোন।আবার একজনকে ছাড়া আরেকজন থাকতে ও পারি না।তাই একই স্কুলে পড়তে হয়ছে আমাদের।আবার একই কলেজে ও পড়তে হবে।আব্বু সেদিন বলেছিলো ওকে মহিলা কলেজে দিবে।সেটাই নাকি ভালো কলেজ আমাদের শহরের।আমাকে তো আর দিতে পারবে না সেখানে।সেদিন খুব কান্না করেছিলাম দুজনে।যমজ বলে কথা।আসল কথা বলতে গেলে আমি ওর জান ও আমার জান।কেউ খারাপ ভাববেন না।এটা ভাইবোন এর কথা।আমার বোন টা রেগে গেছে।আবার এখনি ঠিক হয়ে যাবে।

.

:-এই হৃদয়।কোথায় রে তুই।(মা)

.

:-হ্যা মা বলো।

.

:-এখানে এসে তো বোনের কথা ও ভুলে যাস।চলে যাস ঔ পুকুর এর পাশে।সত্যি যদি কোনো জলপরী থাকতো ঔ পুকুরে তাহলে বিয়ে দিতাম ওর সাথে তোর।

.

:-দুর মা কি যে বলো না লজ্জা করছে।

.

:-থাক লজ্জা পেতে হবে না।যা বড়া বানিয়ে দিয়েছে হৃদির কাছে।

.

:-বড়া পিঠা।(আমি)

.

:-হুমমমম।

.

:-ওকে যাচ্ছি আগে বলবা তো।

।।।।।।।।

দৌড় দিয়ে ছাদে আসলাম।দেখি হৃদি বসে বসে বড়া খাচ্ছে।আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে।আমাদের দুজনের পছন্দ ও এক।মাঝে মাঝে তো ওর জামা পরতে মন চায় পড়ি ও কিন্তু সেগুলো পড়ে তো আর বাইরে যাওয়া যায় না।কিন্তু হৃদি আমার শার্ট প্যান্ট টি-শার্টই পরে।অবশ্য ও ও বাইরে যায় না ঔসব পড়ে।লোকে কি বলবে এই ভেবে।ছোট থেকেই ও আর আমি নাটক করি।ও সব সময় ছেলে মানে নায়ক হবে।আর আমি নায়িকা।

.

:-হৃদু।বোন আমার দে না।(আমি)

.

:-কি দিবো।

.

:-ঔযে বড়া।

.

:-না বড় ভাইয়া।আপনার খেতে হবে না।আমি ছোট আমি একাই খাই।(হৃদি)

.

:-না তুই আমার বড় আপু দে না না আপু।(আমি)

.

:-প্রমিজ কর আমি যা বলবো তাই করবি।(হৃদি)

.

:-হুমমম করবো।(আমি)

।।।।।

এই বড়া পিঠার জন্য যেকোনো জিনিসই করতে রাজি আছি।পিঠার মধ্যে কেনো জানি আমাদের দুজনের এই পিঠাটাই সবচেয়ে ভালো লাগে।ভালো ও বাসি এই পিঠাকে।খেতে ছিলাম মহা আনন্দে।দুজনে খাচ্ছিলাম আর গুনতেছিলাম কে বেশী খেতে পারে।আমি তো কমই খেলাম।আমার বোনটা তো পেটুক।ইয়া খাবে।কিন্তু স্বাস্থ হবে না।হবে কিভাবে আবার ডায়েট করবে নে।শুনছি বিয়ে করবে না নাকি।তাহলে এতো কিছু করে কি লাভ।খেয়ে হাতি হলেই হয়।কেউ পছন্দ করবে না।।

.

:-চল না।(হৃদি)

.

:-কোথায়?

.

:-নদীটাতে গোসল করতে যাবো।

.

:-সকালে তো করলাম পুকুরে গোসল।(আমি)

.

:-না ঔ নদীতে যাবো গোসল করতে চল।(হৃদি)

.

:-আমরা ভালো ভাবে সাতার পারি না তো।

.

:-ছোট আন্টি ও যাবে চল।(হৃদি)

.

:-আমি যাবো না তুই যা।(আমি)

.

:-ওকে তাহলে আমার বড়া গুলো ফেরত দে।

.

:-দ্বারা বমি করতেছি।

.

:-ইয়াক।।।তুই যাবি না তাহলে।

।।

কান্না করে দিবে একটু হলেই।

.

:-ঔ তুই কান্না করবি না প্লিজ।তোর কান্না আমার সহ্য হয় নারে।

.

:-হুমমম কানবো না।চল।

।।।।।

আসলাম হাটতে নদীর পাড়ে।এই পর্যন্ত অনেকবার গোসল করতে এসে করি নাই।হৃদির সাথে আগে ও এসেছিলাম গোসল করতে।কিন্তু করতে পারি নাই।আজকে খালামনি ও এসেছে।এজন্য সাহস লাগছে।তাও নামতে মন চাচ্ছে না।অনেক উৎসাহ লাগতেছে।কিছু না ভেবে নেমে পরলাম।অনেক পানি।তাই খালামনি আমাদের কম পানিতেই নামিয়েছেন।বুক পর্যন্ত পানি।আমি আর হৃদি পানি ছিটা ছিটি করছিলাম।ভাবলাম একটা ঢুব দিবো।দিলাম একটা ঢুব।ফ্রেস হয়ে উঠলাম।আরেকটা ও দিলাম।এখন খালামনি আর হৃদি খেলা করছে।আমি তিন নাম্বার ঢুব দিলাম।খালামনি আর হৃদি দূরেই ছিলো।আমার চোখ বন্ধ ছিলো।আমি ভাবলাম দেখি কত টুক দম আটকে রাখতে পারি।হঠাৎই খেয়াল করলাম একটা মেয়ে আমাকে সম্পূর্ণ জরিয়ে ধরেছে।আমার ছুটবার কোনো শক্তি নেই।আমার দম বন্ধ হয়ে আসতে ছিলো।মনে হচ্ছিলো আমি মরেই যাবো।মেয়েটা কি সব জেনো করলো।আমার দম যখন বন্ধ হয়ে যাবে তখনই আমার ঠোটে আমি ঠোটের স্পর্শ পেলাম।ভয় থাকা শর্তে ও তাকালাম।মেয়েটার শরীরের উজ্জলের জন্য আমি চেহারা দেখতেই পারলাম না।চোখ বন্ধ করলাম।আর সাথে সাথে মেয়েটা ছেড়ে দিলো আমাকে।আমি ও পানি থেকে লাফিয়ে উঠলাম দেখি আশে পাশে হৃদি আর খালামনি ছাড়া কেউ নাই।

.

:-কিরে এতোক্ষন পানির নিচে ছিলি।আমি তো চিন্তাই পরে গিয়েছিলাম।(খালামনি)

.

:-আ আ আরে কিছুু নাা দমম পরীক্ষা কররছিলাামম।(তোতলিয়ে)

.

:-তোতলাচ্ছিস কেন।(হৃদি)

.

:-অনেক ক্ষন ছিলাম পানির ভিতর তাই।

.

:-হয়ছে আমি চিন্তাই পরে গিয়েছিলাম।চল উঠ এখন।(খালামনি)

.

:-ওকে চলো।

।।।।

মুখ দিয়ে বলতে চাইছিলাম কি হয়েছিলো।কিন্তু কিছুতেই কিছু বলতে পারলাম না।কেনো জানি অন্য কিছু বলে দিলাম।বাসায় আসলাম।চিন্তা করতে লাগলাম কি হলো।ঔটা নিশ্চয় মানুষ না।উজ্জল ছিলো।কিন্তু মানুষের আকৃতি ছিলো আমি ওর ঠোট ফিল করেছে।নিশ্চয় ফিমেইল ছিলো।কারন আমি আরো কিছু ফিল করেছি।কিন্তু আমি এসব কাউকে বলতে পারছি না কেনো।খুব অস্থির লাগছে আমার।শুধু ঔ ঠোেটর কথা মনে পরতেছে।কিছুতেই ভুলতে পারছি না।রাতে ঘুমালাম।আমি আর আমার বোনই ঘুমায়।আজকে কেনো জানি আমার চোখে ঘুম নাই।আর ও নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে।খালি বোন বলে কিছু বলতে পারি না।ঘুমাক।আমি ও ঘুমালাম।কিছুক্ষন পর মনে হলো আমার বুকে কেউ শুয়ে আছে।এটা হৃদি প্রায় প্রায়ই করে।তাই আমি কিছু মনে করি না।ঘুমালে ওর হুশ থাকে না।আর আমরা দুইজন ভাই এর মতোই।আমাদের মাঝে ফিলিংস নাই।কিন্তু আজকের স্পর্শটা আমাকে ফিল করাচ্ছে।না না এটা হৃদি না।আমাকে অনেক জোড়ে জরিয়ে রেখেছিলো।বুকে মাথা রেখে শুয়ে ছিলো।আমি চোখ খুলতে চাইলাম বাট পারলাম না।নারাচারা করতে চাইলাম পারলাম না।হঠাৎ দেখি বস্তুটা আমার কানে কানে এসে বললো।

.

:-এসবই তোমার স্বপ্ন।যা মনের রাখার মনে রাখবে তুমি।আর যা ভুলে যাওয়ার তা ভুলে যাবে।বলে আমার চোখে একটা চুমু দিলো।তারপর ঠোটে দিলো।আমি তাকাতেই আমার উপর কাউকেই দেখতে পেলাম না।কি হচ্ছে এগুলো।পাশে চুপ চাপ ঘুমিয়ে আছে হৃদি।না সব আমার মনের ভুল।এতো তারাতারি কেউ তো আর উধাও হতে পারে না।বা নরতে পারে না।আবার ঘুমিয়ে পড়লাম।সকালে উঠলাম।রাতের কিছুই আমার মনে পরছে না।এটুকুই মনে আছে নাক ডেকে ঘুমিয়েছি আমি।চিন্তা রেখে নাস্তা করলাম।আবার ও সব কিছু ঠিক ঠাক।নানু ও ঠিক।নানুর কাছে গেলাম আমি আর হৃদি।

.

:-নানু কেমন আছো এখন।

.

:-এইতো হৃদু আর হৃদি।কবে চলে যায় তোদের ছেড়ে ঠিক আছে নাকি।(নানু)

.

:-এসব বলছো কেনো।তুমি অনেক দিন বাচবা।(হৃদি)

.

:-হুমমম সেটাই তো চেয়েছিলাম তোদের নানা তো তোদের জন্মের আগেই মারা গেছে।আমি চেয়েছিলাম তোদের বিয়ে খেয়েই মরবো।কিন্তু দেখ পোরা কপাল আমার।(নানু)

.

:-দেইখো তুমি আমাদের বিয়ে দেখে বাচ্চা কাচ্চা দেখেই নানার কাছে যাবে।(আমি)

.

:-সেটা হলে তো ভালোই হতো।সেটা হবে না বলেই তো বেচে থেকে আমরা সবাই মরে আছি।

।।।।।

।।।।

।।।

।।

(চলবে)

।।

।।।

।।।।

।।।।।


Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.