*জলপরীর প্রেমে*
পার্টঃ২৫
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)
।।।।।
।।।।।
।।।।।
বিছানা তো সেই বড়।।।।নিলা আমাকে আর জারাকে নিয়ে উঠলো উপরে।।।যাক নিলার ডানার জন্য আমাদের অনেক সুবিধা হচ্ছে।।।রাতটা কেটে গেলো গভীর ঘুমের মধ্যেই।।।আমাকে দুজন কোলবালিশ বানিয়ে ঘুমালো।।।ভাবছি যদি আরেকটা হয় তাহলে কি হতো।।।দুশ্চিন্তা বাদ দিলাম।।।কিছুই করার নাই।।।সকাল হলো।।।।আমি একটু জনুইক দের সাথে ঘুড়তে বের হলাম।।।ওর সাথে পুরো দানব রাজ্যটা ঘুড়ে আসলাম।।।খুব ভালো মনের দানব এই জনুইক দে।।।মাঝে তো আমি ওর নামই ভুলে গিয়েছিলাম।।
।
দানবের সাথে সারা রাজ্য ঘুড়তে ঘুড়তে সন্ধাহ হয়ে গেলো।।।ফিরে এলাম আবার বিলাসভবনে।।।দেখি নিলা আর জারা মেসাজ নিচ্ছিলো।।।দানবী ছাদেহা তাদের পিঠে মেসাজ দিচ্ছিলো।।।আমাকে দেখেই ছাদেহা সরে গেলো।।।
.
--মহারাজ আপনি বিশ্রাম করুন।।।আমি আসছি।।।কিছু দরকার পরলে আমাকে খবর দিবেন।(ছাদেহা)
.
--হুমমম দিবো।।।(আমি)
....
।।।
ছাদেহা চলে গেলো।।।দুজনি খুব লজ্জা পেলো আমার সামনে।।।।।কারন বুঝাতে হবে না।।।।
.
--রানীদের রুমে ঢোকার সময় অনুমতি নিয়ে ঢুকতে হয় জানো না।(জারা)
.
--আমার নিজের রুম।।।তারপর আমার নিজের রানী তাই না????আমি কেনো অনুমতি নিবো?(আমি)
.
--যদি এভাবে অন্যকেউ ঢুকে আমাদের দেখে ফেলতো তাহলে?(নিলা)
.
--তার গর্দান যেতো।(আমি)
।।।।
।।।।
দেখলাম জারার মন খারাপ হয়ে গেলো।
.
--কি হয়েছে মন খারাপ কেনো তোমার?(আমি)
.
--এমনি।(জারা)
.
--না বলো কি হয়েছে।(আমি)
.
--না আমার মনে হচ্ছে আমি তোমাদের দুজনকে বিরক্ত করছি।।।তোমাদের বিয়ে হয়েছে।।।কিন্তু আমি মাঝে চলে আসছি।।।তোমাদের একজনের আরেকজনের দরকার হতে পারে।।।কিন্তু আমি মাঝে চলে আসছি।(জারা)
.
--তো কি আমি তোমাকেও তো বিয়ে করবো তাই না।(আমি)
.
--হ্যা।।।কিন্তু যখন করবা তখনই নাহয় তোমাদের মাঝে এলাম।।।আপাতোতো মনে হয় তোমাদের কিছু সময় দেওয়া দরকার।(জারা)
.
--তুমি এমন বইলো নাতো।।আমরা এভাবেই ভালো আছি।(নিলা)
.
--হ্যা দেখেছো নিলা ঠিকই বলেছে।।।ওর কোনো সমস্যা হচ্ছে না।।।সত্য বলতে আমি তোমাদের দুইজনকেই পেতে চাই।।।তবে একসাথে।(আমি)
.
--তুমি কি জারাকে যতটা ভালোবাসো ততটাই আমাকে ভালোবাসো।(নিলা)
.
--হ্যা হয়তো তোমাদের দুজনের জায়গা আমার মনে সমান সমান হয়ে গেছে।।।দুইজনই আমার জীবন এখন।(আমি)
.
--আমারও জীবন তুমি।(নিলা আর জারা দুইজনই বললো)
।।।।
।।।।
রাতে খবর আসলো কালকে আমাকে সিংহাসনে বসতে হবে।।বুঝলাম দানবদের কাজে অনেক দক্ষতা রয়েছে।।।আর অনেক দ্রুত তারা কাজ করতে সক্ষম।।।আমি শুয়ে পরলাম।।।।।।পরের দিন আমি গিয়ে বসলাম সিংহাসনে।।।আমার জন্য শাহী পোশাক বানানো হয়েছে।।।সেটা পরে আমি সিংহাসনে বসলাম।।।
।
আমার পাশে বসলো নিলা আর জারা।।।মানে তারা আমার রানী।।।
.
--মহারাজ প্রথমেই আমার সালাম নিবেন।।।আমি আপনার মন্ত্রী।আমার নাম হিনোস দে।(মন্ত্রী)
.
--হুমমম বলুন মন্ত্রী।(আমি)
.
--একটু আগেই আমার কাছে পাতালপুরী থেকে একটা সন্দেশা এসেছে।।।(মন্ত্রী)
.
--সেটা কি ব্যাপারে(আমি)
.
--তারা আপনাকে মানে দানবরাজ্যের রাজাকে তার ছেলে মানে জলপুরীর রাজার বিয়ের আমন্ত্রণ করেছে।।।(মন্ত্রী)
.
--আমি সেদিন যা বলেছিলাম।।।আমার রাজা হওয়ার খবর কি তারা পেয়েছে?(আমি)
.
--জ্বী না মহারাজ।(মন্ত্রী)
.
--ওকে ঠিক আছে আমি যাবো।।সেনাপতি।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ।(সেনাপতি)
.
--বিয়েটা হবে কোন জায়গায়?(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ আকাশপুরীর কেউ তো জলপুরীতে যেতে পারবে না তাই পাতালপুরীতেই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে।।।(মন্ত্রী)
.
--বিয়েটা কবে?(আমি)
.
--বিয়ে হবে আরো দুই দিন পর ২য় প্রহরে।(মন্ত্রী)
.
--সেনাপতি আপনি পরশুদিন আপনার সেনা নিয়ে পাতালপুরীর পোর্টালে রেডি থাকবেন।।আমার হুকুমে আপনারা ঢুকে যাবেন পাতালপুরীতে।।।।কেউ বাধা দিলে তজনজ করে ফেলে আগাবেন।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ।(সেনাপতি)
.
--মহারাজ ওদের সাথে শান্তিপূর্ন যুদ্ধ করা যেতো তো।(মন্ত্রী)
.
--হ্যা সেটাই করবো।।।তাদের আমি হুমকি দিবো প্রথমে।।।আর না মানলে তিন রাজ্যের রাজাকে আমি পরাজিত করবো।।।আর সেখানে উপরাজ্যের রাজারাও থাকবে।।।সব মিলিয়ে পুরো সম্রাজ্যটা আমাদের হাতে চলে আসবে।(আমি)
.
--হুমমম মহারাজের জয় হোক।(মন্ত্রী)
.
--তাহলে রাজ পরিষদ শুরু করা যাক।(আমি)
।।।
।।।
প্রথমে জলপুরীর রাজা হয়েও রাজ পরিচালনায় বসলাম এসে দানব রাজ্যে।।।বেশ আশ্চর্যকর বিষয় এটা।।।যায়হোক সব কাজকর্ম বুঝে নিলাম আমি।।।অবশ্য শুনেছি রাজার নাকি অনেক কষ্টের কাজ করতে হয়।।।ঠিকই এক নাগারে এতোক্ষন সিংহাসনে বসে থাকার মতো কষ্টের কাজ কি আর হতে পারে।।।হয়তো এরচেয়ে কষ্টের কাজ আর কোনোটাও হবে না আমার মতে।।।।বসে থাকতে থাকতে আনমনা হয়ে গেলাম।।।তাই সেনাপতিকে সাথে নিয়ে বের হলাম বিকালে।।।তার সাথে কিছু খোশ আলাপ করলাম।।।কারন এখন সেনাপতির উপরে আমার বিশ্বাস একটু কমই হয়।।।আর আমার জানা মনে হয়তো দানবদের কেউ আমার সাথে বিশ্বাস ঘাতকটা করবে না।।।
।
না করলেই ভালো।।।নাহলে এই দানব রাজ্যকে তজনজ করে দিতে আমার সময় লাগবে না।।।ঘুরতে ঘুরতে রাতে ফিরলাম রাজ প্রাসাদে।।।হাতে তো ট্রিশুল সব সময়ই থাকে।।।এটাকে তো আর ছাড়া যাবে না কোথাও।।।এটাই যে আমার অস্ত্র।।।আমি আমার শায়ন রুমে ঢুকলাম।।।ভেবেছিলাম এটাও বিশাল হবে।।।কিন্তু না আমাদের সাইজের করেই বানানো হয়েছে।।।না এটার জন্য সেনাপতিকে পুরস্কৃত করতে হবে।।।দেখলাম আমার দুই রানীই বসে বসে সাজতে ছিলো।।।
.
--কি করছেন রানীরা?(আমি)
.
--দেখতেই তো পারছো?(জারা)
.
--হুমমম এতো সাজের কি প্রয়োজন আছে।।।এমনিতেই দুজন পরী তোমরা সেজে তো পেত্নী হয়ে গেছো তোমরা।(আমি মজা করে বল্লাম)
.
--কি বল্লা?(নিলা)
.
--পেত্নী মানে কি?(জারা)
.
--পেত্নী মানে জানো না সেটা মানে তো সুন্দরী।(আমি)
.
--ঔ পেত্নী মানে সুন্দরী না।।।।জারা ও আমাদের বিশ্রী বোঝাতে যাচ্ছে।।।মানুষ ভূত বলে।।।ঔ ভূতদের মেয়ে জাতিদের বলা হয় পেত্নী।।।মানে তারা খুব ভয়ঙ্কর দেখতে হয় তাই।(নিলা)
.
--কি আমরা পেত্নী।।।ওকে দেখাচ্ছি আজকে পেত্নী দুইটা কি করতে পারে।(জারা)
।।।।
।।।।
প্রথমে জারা আমার উপরে ঝাপিয়ে পরলো।।।আমি বিছানায় ছিলাম।।।আমার উপরে পরার ফলে আমি বিছানায় পরে গেলাম।।।আমার উপরে বসে আমাকে আস্তে আস্তে মারতে শুরু করলো।।।আমি ধপ করে ওকে উল্টিয়ে ওর উপরে বসে ওর হাত দুটি ধরে ফেললাম।।।পরে দেখি নিলাও আমার উপরে ঝাপিয়ে পরলো।।।আমাকে আবার শুইয়ে দিলো দুইজন।।।তারপর দুইজনই আমার উপরে বসলো।।।নিলা ধরলো আমার ডান হাত।।।আর জারা ধরলো বাম হাত।
।
এর পরে আর কি।।।
.
--কি বল্লা আমরা দেখতে পেত্নীর মতো তাই না।(নিলা)
.
--আমাদের মতো সুন্দরী কি তুমি পাবা কোথাও?(জারা)
.
--ওমা।।।তোমাদের মতো দুটো যদি আমার উপরে এভাবে বসে থাকে আমি কি বাচবো?(আমি)
.
--আগে বলো আমরা দেখতে কেমন?(জারা)
.
--কি বলবো।।।তোমাদের সুন্দর্য কি ভাষায় প্রকাশ করা যায় বলো।(আমার কথায় দুজন অনেক লজ্জা পেলো)
.
--এবার তো উঠো।(আমি)
.
--উহু।।।আমাদের না ক্ষিদে পেয়েছে অনেক আজ।(জারা)
.
--ক্ষিদে পেয়েছে তো গিয়ে খেয়ে আসি চলো।(আমি)
.
--উহু অন্য কিছু খেতে মন চাচ্ছে।(জারা)
.
--কি?(ঢোপ গিলে)
।।।।
।।।।
ভাবছিলাম নিলা যা করতে যাচ্ছে সেটা নাহয় মানলাম।।।কিন্তু জারার সাথে তো এখনো বিয়ে হয়নি।।।খারাপ কিছু না করে মেয়েটা।।।কিন্তু না।।।প্রথমেই জারা ওর ঠোট আমার ঠোটে দিয়ে দিলো।।।নিলা লজ্জা পাচ্ছিলো।।।ওকেও তো বরের অধিকার নিতে হবে জারার থেকে তাই না।।।তাই ওর ঠোটও চলে আসলো আমার ঠোটে।।।এমন করেই দুই সুন্দরী জলপরী ও আধা পরী আমাকে চুমুতে মাতিয়ে দিলো।।।।ব্যাপারটা বেশী দূর গরাতে পারে।।।তাই এক ধাক্কায় দুটোকে ফেলে দিলাম পাশে।
.
--আ এটা কি হলো?(নিলা)
.
--ব্যথা পেলাম তো।(জারা)
.
--তোমাদের পেট ভরলেও আমার অনেক ক্ষিদে পেয়েছে আর সেটা পেটে কিছু দিলেই হবে।।।চলো খাবার টেবিলে যাওয়া যাক।(আমি)
.
--দূর একটু রোমান্সও করতে দিবা না।।।(নিলা)
.
--একদম আনরোমান্টিক হয়ে যাচ্ছো দিন দিন।(জারা)
.
--বিয়েটা হোক তোমার সাথে তারপর দুইজনকে একসাথে বোঝাবো কতটা রোমান্টিক আমি হতে পারি।(আমি)
.
--তাহলে দেরী করছো কেনো????কালকেই বিয়ে করো জারাকে।।।(নিলা)
.
--সহ্য হচ্ছে না বুঝি?(আমি)
.
--বিয়ে হওয়ার পরে।।।স্বামী পাশে থেকেও যদি হা থাকে তাহলে কেমন লাগে সেটা মেয়েরাই বুঝে।(নিলা)
.
--হুমমম চিন্তা কইরো না।।।পরশুদিনের পর থেকে আমরা একদম খুশি হয়ে থাকবো।।্আমার দিন এক একদিন এক এক রাজ্যে কাটবে।।।(আমি)
.
--সত্যি।(নিলা)
.
--হ্যা।।।একদিন তোমার কাছে থাকবো।।।একদিন তোমার কাছে থাকবো।(আমি)
.
--হুমমম চলো আগে খেয়ে আসা যাক।(জারা)
.
--হুমমম চলো।(নিলা)
.
--হুমমম যাওয়া যাক।।।(আমি)
।।।।
।।।।
খেতে গেলাম।।।আজকের রাতের ভোজটা আর কালকের মতো হয়নি।।।সব কিছুই আমাদের সাইজ অনুযায়ী বানানো হয়েছে।।।কিন্তু অবাক করার বিষয়।।।সব কিছু করলো কে???দানবরা তো আর এতো ছোট কিছুতে রান্না বান্না করতে পারবে না।।।তাদের কাছে খেলনা হাড়ি পাতিল দিয়ে খেলার মতো হয়ে যাবে।।।থাক হতে পারে যেভাবেই নাহয় রান্না করে থাকুক।।।আমার ক্ষুদা পেয়েছে।।।তাি আমি খেতে ছিলাম।।।
.
--কেমন হয়েছে রান্না?(নিলা না খেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো)
.
--হ্যা অনেক ভালোই হয়েছে।।।কেনো তোমার ভালো লাগছে না।(আমি)
.
--হ্যা লাগবে না কেনো?(নিলা)
.
--ওওও তাহলে খাচ্ছো না কেনো খাও।(আমি)
.
--তোমার জন্য রান্না করেছে।।।তোমার ভালো না লাগলে কিভাবে খায় ও বলো।(জারা)
.
--কি ও রান্না করছে।।(আমি হঠাৎ কথাটা শুনে কেশে উঠলাম)
.
--হুমমম।(নিলা)
.
--রান্না পারো কিভাবে?(আমি)
.
--আমার আম্মা শিখিয়েছিলেন আমাকে।(নিলা)
.
--ওওও।।।তা তো ভালোই।।।জারা তুমি রান্না করতে পারো?(আমি)
.
--উহু।।।আমাকে তো কোনো কাজ করতেই দেওয়া হয়নি।।।তাই পারি না।(জারা মুখ কালো করে)
.
--হুমমম তবে শিখে নিবে।।।আমি কোনো দাসীর রান্না খাওয়ার থেকে আমার দুই রানীর হাতের রান্না খেতেই বেশী পছন্দ করবো।(আমি)
.
--হুমমম শিখে নিবে।(জারা)
.
--হুমমম।(আমি)
......
।।।।।
খাওয়া শেষ করলাম।।।তারপর রুমে এসে শুয়ে পরলাম।।।পরে নিলা আর জারাও এসে আমার পাশে শুয়ে পরলো।।।রাত কেটে গেলো।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((((চলবে)))))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।